বড়াইগ্রামে অধ্যক্ষকে পুনর্বহাল নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের মারামারি-মানববন্ধন ও মামলা

এফএনএস (আপন; বড়াইগ্রাম, নাটোর) : : | প্রকাশ: ৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৪১ পিএম
বড়াইগ্রামে অধ্যক্ষকে পুনর্বহাল নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের মারামারি-মানববন্ধন  ও মামলা

বড়াইগ্রামের রাজাপুর ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের অনুসারী শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি, বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষই লাঠিসোটাসহ মুখোমুখি অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষক-কর্মচারীরা আতঙ্কে ছুটাছুটি শুরু করেন। খবর পেয়ে ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। মারপিটের শিকার সহকারী অধ্যাপক নবীর উদ্দিন ও অফিস সহায়ক মাসুদ রানা রতনকে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।

জানা গেছে, গত জুলাই বিপ্লবের পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আওয়ামীলীগ সমর্থিত স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ মোহাম্মদ তুঘলককে কলেজ থেকে বের করে দেন। পরে গভর্নিং বডি তাকে তিন মাসের বাধ্যতামুলক ছুটি দিয়ে উপাধ্যক্ষ নজরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন। কিন্তু ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও অধ্যক্ষ কলেজে আসতে পারছিলেন না। সম্প্রতি অধ্যক্ষের অনুসারী ও বিএনপিপন্থী কিছু শিক্ষক-কর্মচারীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার কলেজের অফিস কক্ষে অধ্যক্ষের পক্ষ ও বিপক্ষের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে দুই দফা মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষক নবীর উদ্দিন (৪৫) ও অফিস সহকারী মোহাম্মদ আলী (৪০) আহত হন। বুধবার সকালে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সমর্থকরা পুনরায় অফিস সহায়ক মাসুদ রানা রতন (৪৬) কে পিটিয়ে আহত করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রতনের স্বজনসহ অধ্যক্ষ তুঘলকের অনুসারীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে নাটোর-পাবনা মহাসড়কে মানববন্ধন শেষে লাঠিসোটা নিয়ে কলেজে ঢুকে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকেন। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। এ সময় দীর্ঘ নয় মাস পর অধ্যক্ষ মোহাম্মদ তুঘলক পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। 

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম বলেন, আমাকে জোর পূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। আমি এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করবো। অধ্যক্ষ মোহাম্মদ তুঘলক বলেন, আমাকে তিন মাসের ছুটি দেওয়া হয়েছিল। সেই ছুটি শেষ হলেও আমাকে যোগদান করতে দেয়া হয়নি। আজ শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সহায়তায় আমি কাজে ফিরে এসেছি। 

কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুল আলম রনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর বিতাড়িত আওয়ামীপন্থী অধ্যক্ষকে পুনর্বাসন করতে বিএনপির একটি পক্ষ ও অধ্যক্ষের অনুসারীরা কলেজে হামলা চালিয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

বড়াইগ্রাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহাবুবুর রহমান বলেন, সহকারী অধ্যাপক নবীর উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। অপর পক্ষের লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগে এবং কলেজের আইন-শৃংখলা স্বাভাবিক রাখতে সবাইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর কলেজের বিষয়ে তাদের গভর্নিং বডি ব্যবস্থা নেবেন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে