বাবার লাশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সেরেই পরীক্ষার সিটে বসেছে সুদীপ্ত

এফএনএস (আপন; বড়াইগ্রাম, নাটোর) : : | প্রকাশ: ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম
বাবার লাশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সেরেই পরীক্ষার সিটে বসেছে সুদীপ্ত

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাবার লাশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সেরেই এসএসসি পরীক্ষার সিটে বসতে হয়েছে শ্রী সুদীপ্ত কুমার দে’ কে। বৃহস্পতিবার নাটোরের বড়াইগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। সুদীপ্ত কুমার দে উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের মানইর গ্রামের সুনীল চন্দ্র দে’র একমাত্র ছেলে। সে জোনাইল সেন্ট লুইস উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হিসাবে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। 

তার বাবা জোনাইল বাজারের সব্জিপট্টিতে একটি চায়ের স্টল চালিয়ে সংসারের ব্যয়ভার বহন করতেন। 

জানা যায়, গত রোববার সুদীপ্ত’র বাবা বাড়ি থেকে বাই সাইকেল নিয়ে দোকানে যাচ্ছিলেন। পথে জোনাইল মিশন গেট এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগতির মোটর সাইকেল তাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিকে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের আইসিইউয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। এতে শেষ বারের মত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার সময়েই তাদের সংসারে নেমে আসে বিষাদের ছায়া। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় শ্মশানে বাবার মুখাগ্নি ও অন্ত্যেষ্টেক্রিয়া সম্পন্ন করে সুদীপ্ত। পরে মা মনিকা রাণী দেসহ স্বজনদের অনুরোধে বুক ভাঙা কান্না আর চোখের জল মুছে পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। 

সংশ্লিষ্ট কক্ষ পরিদর্শক ইজাদুল হক বলেন, পরীক্ষার পুরো সময়টাতেই সুদীপ্ত খুব মনমরা ছিল, মাঝে মাঝেই সে চোখের জল মুছতেছিল।  

বড়াইগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের হল সুপার রফিকুল হাসান বলেন, তার বাবাই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি। বাবার লাশের দাহ করে পরীক্ষার দেয়াটা সত্যিই খুব কঠিন। তারপরও সে যেন কোন অসহায়ত্ব বোধ না করে সে জন্য আমরা মাঝে মাঝেই খোঁজ নেয়াসহ তাকে সবভাবে সাহস যুগিয়েছি।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে