পিএসসি প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারির আলোচিত ঘটনায় এবার সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনের ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের ওপর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নজরদারি আরও জোরালো হয়েছে। তার নামে থাকা অস্থাবর ও স্থাবর সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১৩ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে উপসহকারী পরিচালক জাকির হোসেন এই সংক্রান্ত আবেদন করেন।
আদালতের আদেশে বলা হয়, সিয়ামের নামে থাকা একটি গাড়ি এবং দুটি ব্যাংক হিসাবে মোট ২৩ লাখ ১ হাজার ৫৯৯ টাকা অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া মানিকগঞ্জের কালকিনি উপজেলায় তার নামে থাকা ১৮ শতাংশ জমিও জব্দ করা হয়েছে।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, সোহানের নামে থাকা এসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর বা দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে মালিকানা পরিবর্তনের চেষ্টা হতে পারে। ফলে সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে তার সম্পদ অবরুদ্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এর আগে, গত ৭ এপ্রিল আদালত সৈয়দ সোহানের বাবা ও পিএসসির সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলী জীবনের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তার একটি গাড়ি, ১৩টি ব্যাংক হিসাব, দুটি ফ্ল্যাট, একটি ছয় তলা বাড়ি এবং ৮ দশমিক ৮৮ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়।
এরও আগে, ৫ জানুয়ারি অবৈধভাবে পাঁচ কোটি ৩৭ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন এবং প্রায় ৪৫ কোটি টাকার অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে আবেদ আলী, তার স্ত্রী শাহরিন আক্তার শিল্পী এবং ছেলে সোহানের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুদক মনে করছে, সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম তার পিতার প্রশ্নফাঁস ও অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ লেনদেনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। ফলে তার বিরুদ্ধে জব্দ ও অবরোধের এই পদক্ষেপ তদন্তের অংশ হিসেবেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পিএসসির মতো একটি সংবেদনশীল ও সম্মানজনক প্রতিষ্ঠানে এমন দুর্নীতির ঘটনায় দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। প্রশ্নফাঁসের মতো অপরাধ কেবল প্রতিষ্ঠানটির সুনামই ক্ষুণ্ন করেনি, বরং লাখো মেধাবী তরুণের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।