সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চন্ডিপুল এলাকা। বুধবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চন্ডিপুল অংশ অবরোধ করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শতাধিক শিক্ষার্থী। এতে প্রায় এক ঘণ্টা স্থবির হয়ে পড়ে সড়কটি, দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই দাবিগুলো উপেক্ষিত হয়ে আসছে। এরই প্রতিবাদে তারা শান্তিপূর্ণভাবে মহাসড়কে অবস্থান নেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে আন্দোলন এখানেই শেষ নয়Ñবিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তারা নগরীর চৌহাট্টায় আরও বড় পরিসরে কর্মসূচি পালন করবেন।
বুধবার সকাল থেকেই পলিটেকনিক ক্যাম্পাসে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর মিছিল আকারে চন্ডিপুল এলাকায় এসে অবস্থান নেন তারা। উল্লেখযোগ্য হলো, আগের দাবিগুলোই এবারও আন্দোলনের কেন্দ্রে রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির সারসংক্ষেপ:
১. পদোন্নতি কোটা বাতিল ও নিয়োগ বাতিল:
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০% প্রমোশন কোটা বাতিল, ২০২১ সালে বিতর্কিতভাবে নিয়োগ পাওয়া ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুতির দাবি।
২. ভর্তির বয়সসীমা নির্ধারণ ও মানসম্পন্ন কারিকুলাম:
যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করে উন্নত বিশ্বের আদলে মানসম্পন্ন চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালুর দাবি।
৩. পদবঞ্চনার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা:
ডিপ্লোমা পাস শিক্ষার্থীদের অধিকার লঙ্ঘন করে যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের নিচু পদে নিয়োগ দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান।
৪. কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার দায়িত্বে কারিগরি পেশাজীবী নিয়োগ:
বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে অ-কারিগরি ব্যক্তিদের নিয়োগ বন্ধ করে শিক্ষিত ও দক্ষ কারিগরি পেশাজীবীদের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি।
৫. স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় ও সংস্কার কমিশন গঠন:
কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠনের প্রস্তাব।
৬. টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষার
পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত মানের একটি টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তাদের শতভাগ ভর্তি নিশ্চিতের দাবি।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এসব দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।