জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের ফোঁপড়া সুজাপুর গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির পার্টি অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ফুলদিঘী বাজারে এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম গুরুতর আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, গত ১লা মাঘ আলমপুর ইউনিয়নের নশিপুর গ্রামের নাঈম (২০) কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে একয় ইউনিয়নের ফোঁপড়া সুজাপুর গ্রামে ধর্মীয় ওরশ মাহফিলে গিয়ে (ধানের গোরা) খরে আগুন লাগা নিয়ে সন্ধেহবশত ওই গ্রামের নওফেল (২২) ও রাব্বির সাথে নাঈম ও তার সহযোগীদের বাকবিতন্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়।
ওই ঘটনার জেরে বৈশাখী মেলা উপলক্ষে নশিরপুর গ্রামের কালিতলা বাজারে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যায় ফোঁপড়া সুজাপুর গ্রামের নওফেল, রাব্বিসহ কয়েকজন কিশোর। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে আবার উত্তেজনা সৃষ্টি হলে নওফেল, রাব্বিকে মারধর করে তারা। স্থানীয়'রা ঘটনাটি মিমাংশা করে দেয়।
তারা বাড়ীতে এসে মিলনকে জানালে সে ১০-১৫ জন সহযোগী নিয়ে ফুলদীঘি বাজারে বিএনপি পার্টি অফিসে গিয়ে শহিদুল ইসলামের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তারা পার্টি অফিসের ভিতরে শহিদুলকে বেধরক মারধর করে হাত ভেঙ্গেদেয় ও অফিসের চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে চলে যায়। স্থানীয়রা শহিদুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পরলে ফুলদিঘী বাজারে পার্টি অফিসে লোকজন জড়ো হতে থাকে।
খবর পেয়ে রাত ৮ টায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি খালেদুল মাসুদ আঞ্জুমান ঘটনাস্থলে গিয়ে নেতাকর্মীদের ফিরিয়ে নিয়ে যায়। পরে রাত ৯টার দিকে কয়েকজন দুর্বৃত্ত ফোঁপড়া গ্রামে গিয়ে চঞ্চল ও মিলন এর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে ।
মিলনের স্ত্রী সুবর্ণা আক্তার বলেন, ফুলদিঘী বাজারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহিদুল তার লোকজন আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে স্বর্ণালংকার ও দুটি বিদেশি গরু লুট করে নিয়ে যায়। পরে গরু দুটি পাওয়া গেলেও স্বর্ণালংকার ফেরত পাওয়া যায়নি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি চাই।”
এ বিষয়ে মিলন বলেন, আমি কেবল শহিদুল ভাইয়ের সঙ্গে নশিরপুরের মীমাংসিত ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি উত্তেজিত হয়ে আমাদের ওপর চড়াও হন এবং নিজের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে আমাদের ফাঁসাতে চাচ্ছে। আমরা কোনো পার্টি অফিস ভাঙচুর করিনি।”
গুরুতর আহত বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলামের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোট ছোট বাচ্চারা নশিরপুর বৈশাখী মেলায় তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়। তাদের উভয়কে ডেকে আমি মীমাংসা করে দিয়েছি।
পরে মিলন ১০-১৫ জন লোক নিয়ে এসে বিএনপির পার্টি অফিসে হামলা ও ভাংচুর করে। আমাকে বেধড়ক মারপিট করে রাস্তায় ফেলে দেয়।
ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি দীপেন্দ্রনাত সিং বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে আরও সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। ঘটনার তদন্ত চলছে ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেলে, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।