দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আধুনিক যুগে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৪৮সালে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু মানবতার মুক্তির দূত হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৬২৪ খৃস্টাব্দে মদীনা সনদের মাধ্যমে মানবাধিকারের লিখিত চুক্তি বাস্তবায়ন করে গেছেন। তিনি সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেছেন। ইসলামই দিয়েছে মানবতার প্রকৃত মুক্তির সনদ।পাশ্চাত্যের মানবাধিকারের বুলি মূলত মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার। ইসলামের মানবাধিকারকে আন্ডার স্টিমিট করার জন্যই পশ্চিমারা কথিত মানবাধিকারের ফেরি করে। অথচ তারাই ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়াসহ মুসলিম দেশগুলোতে রীতিমতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। ভারত তার পার্শ্ববর্তী কাশ্মীর ও বাংলাদেশের সাথে জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের ধ্বজাধারীরা এই নিয়ে কোনো কথা বলে না, এটাই তাদের আসল চরিত্র বলে মন্তব্য করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম। মঙ্গলবার (১০ই ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত “বৈষম্য বিলোপ করে মানবাধিকারের সংস্কৃতিতে গড়ব নতুন বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইনের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মুফতী আবু বকর সিদ্দীকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সেক্রেটারি জেনারেল মুফতী মানসুর আহমদ সাকী। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মাহাফুজুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও গবেষক অ্যাডভোকেট ইমতিয়াজ আহমেদ সজল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বরকত উল্লাহ লতিফ, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন সোহাগ, ইসলামী আইনজীবী পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট ইবরাহিম খলিল হাওলাদার। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন, দেশ একটি দীর্ঘমেয়াদি ফ্যাসিবাদের জাঁতাকল থেকে মুক্তি পেয়েছে, সুতরাং যেই বৈষম্য বিলোপ করে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যেই বিপ্লব সাধিত হয়েছে, তা যেন হাতছাড়া না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এদেশের মানুষের ৬টি মৌলিক অধিকার খাদ্য, বাসস্থান, পোশাক, শিক্ষা, চিকিৎসা ওনিরাপত্তার সাথেসাথে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। আর এক্ষেত্রে ইসলামই সেরা রোল মডেল হতে পারে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুফতী মানসুর আহমদ সাকী বলেন, জুলাই বিপ্লবের মধ্যদিয়ে মানবাধিকার হরনকারী আওয়ামীলীগের পতন ঘটিয়েছে দেশের ছাত্রজনতা। সম্প্রতি সিরিয়ার ফ্যাসিবাদী বাশার আল আসাদের পতন হয়েছে। সুতরাং বিশ্বজুড়ে ছাত্র-যুবারা জেগে জেগে ওঠেছে। মাজলুমানের জয় হবেই ইনশাআল্লাহ।বক্তব্যে আলোচকগণ দেশে মৌলিক সংস্কার, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ, চাকরি ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করার প্রতি গুরাত্বারোপ করেন। এছাড়াও পতিত ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় দেশবিরোধী প্রোপাগান্ডার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।