বাজারে চাল, তেল, চিনি, আলু, পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তি। এর সঙ্গে বাড়লো সয়াবিন তেলের দামও। এখন থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৭৫ টাকা। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে ৮ টাকা। গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দিন। এমনিতেই নিম্ন ও স্থির আয়ের মানুষ কোনোভাবেই তাদের সীমিত আয় দিয়ে সংসারের চাহিদা মেটাতে পারছে না। ফলে পরিবারের খাদ্যচাহিদা ও পুষ্টিচাহিদার সঙ্গে আপস করতে বাধ্য হচ্ছে। এরমধ্যে সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারব্যবস্থা সংস্কারে উদ্যোগ না নিয়ে পুরনো ব্যবস্থা বহাল রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এতে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, আমাদের বাজারব্যবস্থায় অনেক ধরনের সিন্ডিকেট বা চক্র ক্রিয়াশীল। মজুদদারি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে তারা অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করে। অসাধু অনেক ব্যবসায়ীর অতি মুনাফার লোভও বাজারকে অস্থিতিশীল করে। পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের যেসব সংস্থা রয়েছে, তাদের কার্যকলাপও আশানুরূপ নয়। টিসিবির ট্রাক সেল কিংবা খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য সংস্থার খোলাবাজারে পণ্য বিক্রির উদ্যোগ বাজারে কোনো প্রভাবই ফেলতে পারছে না। এই পরিস্থিতি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে দেশে দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তা ছাড়া দারিদ্র্যের হার নির্ণয় নিয়েও সমস্যা আছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান ড. রেহমান সোবহান বলেছেন, দেশে বৈষম্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে কাঠামোগত সমস্যা আছে। সমাজে বৈষম্য বাড়ছে, কিন্তু সেই বৈষম্যের চিত্র যথাযথভাবে উঠে আসছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক। আমরা আশা করি, সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।