বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী মতিউর রহমান মোল্লা ৭ বছর, অফিস সহায়ক আমির আলী হাওলাদার ১১ বছর ও বিলকিস আক্তার ১২ বছর একই স্থানে করর্মরত রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন একই স্থানে থাকার কারনে তাদের বিরুদ্ধে জনগনের কাছথেকে অর্থ আদায়, অনিয়ম, দূর্নীতি ও নিয়মিত অফিস না করার বিস্তার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাদের অপরাধের কারনে চার জন ইউএনও তাদের লিখিত শো’কজ দিয়ে ছিলো। তারা শো’কজের কোন জবাব নাদিয়ে বহাল তরিয়তে রয়েছে। তাদের খুঁটির জোর কোথায় ?।
স্থানীয় ও আগৈলঝাড়া ইউএনও অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী মতিউর রহমান মোল্লা ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট, অফিস সহায়ক আমির আলী হাওলাদার ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল ও বিলকিস আক্তার ২০১৪সালের ১লা ডিসেম্বর যোগদান করে। মতিউর রহমান মোল্লা ৭ বছর, আমির আলী হাওলাদার ১১ বছর ও বিলকিস আক্তার ১২ বছর ধরে আগৈলঝাড়ায় কর্মরত রয়েছে।
অফিস সহায়ক আমির আলী হাওলাদার নিয়মিত কর্মস্থালে না আসা ও বিনা অনুমতিতে কর্মস্থল ত্যাগ করা সরকারী চাকুরী শৃঙ্খলা ভঙ্গর এবং ঘুষ নেওয়ার কারনে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন ৯ মে ২০২৪ ইং তারিখে আমির আলীকে শো’কজ করা হয়। এছাড়া বিগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী রওশন ইসলাম ১৬ সেপন্টম্বর ২০২০ ইং সালে , উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন ১৮ সেপ্টম্বর ২০২২ ইং সালে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস ৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং সালে এই অপরাধে শো’কজ করা হয়েছিলো তাকে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস সহকারী মতিউর রহমান মোল্লা গত ৫ আগস্টের পর একটানা ৬৮ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। ৮ম শ্রেণী পাস মতিউর নিয়োগ হয় নৈশ্যপ্রহরী হিসেবে। তিনি যুবলীগ করার কারনে আওয়ামীলী সরকার আমলে তাকে অফিস সহকারী হিসেবে পদন্নোতি দেয়া হয়। মতিউরের দায়িত্ব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সকল কাগজপত্রের চিঠিপত্র লেখা। কিন্তু তিনি কোন চিঠি লিখতেই পারেন না।
তার বাড়ি পার্সবর্তি উপজেলা গৌরনদীর বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি এর পূর্বে গৌরনদী উপজেলা সহকারীকমিশনার(ভূমি) অফিসে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ী ও কর্মস্থল একই উপজেলাতে এবং তিনি যুবলীগের একজন কর্মী হবার সুবাদে তার দখলে ছিলো গোটা ভূমি অফিস। তার ভয়ে কোন মর্ককর্তা কর্মচারি কথাবলতে সাহশ পেতোনা।
অফিস সহায়ক বিলকিস আক্তারে বাড়ী একই উপজেলাতে হওয়ার কারনে সে কাউকে সম্মান দেয়না। নিয়মিত আফিসে আসেনা। তার ভয়ে অনেকে তার বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারে না।
অভিযুক্ত অফিস সহায়ক আমির আলী হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, আমি প্রায় একযুগ আগৈলঝাড়ায় কর্মরত আছি। আমাকে চার জন ইউএনও শো’কজ দিয়েছে একথা সত্য। আমি উপজেলার চেংগুটিয়া গ্রামের ডলি আক্তার নামে এক জনের কাছ থেকে দুইশত টাকা নিয়ে ছিলাম তা ফেরত দিয়েছি।
অভিযুক্ত অফিস সহকারী মতিউর রহমান মোল্লা বলেন, ৫ আগস্টের পরে বিএনপি’র ভয়ে আমি ৬৮ দিন আফিসে আসি নাই একথা সত্য। আমি ৮ম শ্রেণী পাস নৈশ্যপ্রহরী হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করি পরবর্তিতে আমার পদউন্নতি হয়েছে।
এ বিষয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন বলেন, অফিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি অফিস কর্মচারীদের অনিয়মের বিরুদ্ধে আমার পূর্বের তিন জন ইউএনও স্যার তাদের শো’কজ দিয়েছে। আমিও শো’কজ দিয়েছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অফিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে সেই অফিস কখনও দুর্নীতি মুক্ত করা সম্ভব নয়। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।