চুয়াডাঙ্গায় পিতা হত্যায় ছেলে দায়ী নয়, সম্মেলনে নিহতের মায়ের দাবী

এফএনএস (কাজী মৃদুল; কোট চাঁদপুর, ঝিনাইদহ) : | প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:৫১ পিএম
চুয়াডাঙ্গায় পিতা হত্যায় ছেলে দায়ী নয়, সম্মেলনে নিহতের মায়ের দাবী

চুয়াডাঙ্গা শহরে ছেলের হাতে পিতা খুনের আলোচিত ঘটনার খুনি ও প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে পিতা হত্যার দায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের উপর চাপানো হয়েছে   দাবী করে নিহতের বৃদ্ধা মা, ৫ ভাই বোন সংবাদ সম্মেলন করেছেন। চুয়াডাঙ্গায় নিরাপত্তা জনিত কারণে রবিবার (২৭এপ্রিল ২০২৫) বেলা ১২টার সময় কোটচাঁদপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত কাজী আমির ওরফে রিণ্টু’র বড় ভাই কামাল উদ্দীন- দাবী করে বলেন, আমার ভাই রিণ্টু খুন হন গত ২২মার্চ ২০২৫ তারিখে চুয়াডাঙ্গা শহরের পলাশ পাড়ার নিজ বাড়ীতে। তাকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে। ভাইয়ের অর্থ সম্পদ আত্মসাৎ ও তার স্ত্রী রত্না খাতুনের পরকিয়ার বুলি হয়েছেন তার ভাই কাজী আমির ওরফে রিণ্টু। তিনি বলেন- মূল ঘটনা আড়াল করতে নিহত রিণ্টুর একমাত্র ছেলে মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র অপ্রাপ্ত বয়স্ক রিফাত (১৭)কে আসামী করে থানায় দেয়া হয়েছে। নিহত রিণ্টুর ২ ছেলে- মেয়ে। মেয়ে জারিন ইয়াসমিন ও ছেলে রিফাত। বর্তমানে রিফাত পিতা হত্যার দায়ে আদালতের মাধ্যমে যশোহর শিশু সংশোধনাগারে রয়েছে। হত্যার কারণ হিসাবে কামাল উদ্দীন উল্লেখ করেন, খুন হওয়া রিণ্টুর স্ত্রী রত্না’র পরকিয়ার সব ঘটনার সাক্ষি ছিল ছেলে রিফাত। তা ছাড়া রিণ্টু’র অমতে বিয়ে করায় মেয়ে জারিনের সাথে পিতা রিণ্টুর সম্পর্ক ছিল তিক্ততার। তাই রিণ্টুর স্ত্রী রত্না ও মেয়ে জারিন নিজেদের পথকে পরিস্কার করতে এবং অর্থ সম্পদ হাতাতে ভাড়া করা খুনি দিয়ে মা-মেয়ে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। সেই সাথে হত্যার মূল ঘটনা আড়াল করতে মায়ের প্ররোচনায় মেয়ে জেরিন বাদি হয়ে পিতা হত্যা জন্য একমাত্র ভাই রিফাতকে আসামী করে থানায় মামলা করেছেন। হত্যার পিছনে রিণ্টুর শ্বশুর ও এক শ্যালককেও দায়ী করেন পাশাপাশি খুনের আলামত ধ্বংসের অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন- প্রকৃত আসামীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদের কথা পুলিশ প্রসাশনের কাছে বার বার বললেও তারা অদৃশ্য কারণে সে দিকে যাচ্ছেন না। 

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন- খুন হওয়া রিণ্টু’র বৃদ্ধা মা মমতাজ পারভীন, ভাই কাজী আমির পিণ্টু, বোন কাজী খাদিজা পারভীন, কাজী হেলানা পারভীন, কাজী সুলতানা আনোয়ার। এ সময় ৮০ বছর বয়স্ক অসুস্থ নিহত রিণ্টু’র মা মমতাজ বেগম সাংবাদিকদের বলেন- আমার পুতা ছেলে রিফাত তার বাবাকে হত্যা করিনি, এটা সম্ভব নয়। আমার ছেলে রিণ্টুর প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে আপনাদের মাধ্যমে পিআইপি নিকট মামলা হস্তান্তরের সংশ্লিষ্ট প্রসাশনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে মোবাইলে নিহত রিণ্টুর স্ত্রী রত্না খাতুনের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চাননা বলে জানান। 

প্রসঙ্গতঃ গত ২২মার্চ ২০২৫ তারিখে চুয়াডাঙ্গা শহরের পলাশ পাড়ার নিজ বাড়ীতে  কাজী আমির ওরফে রিণ্টু ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হন। এ সময় তিনি মাগরিবের নামাজরত অবস্থায় ছিলেন। পরে তাকে হাসপাতালে আনার ১ ঘণ্টা পর রিণ্টু মারা যান। ঘটনার সময় স্ত্রী রত্না , মেয়ে জারিন ও ছেলে রিফাত বাসায় ছিলেন। পিতা হত্যার জন্য ভাই রিফাতকে আসামী করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় মামলা করেন বোন জারিন ইয়াসমিন। মামলা নং- ২৫, তারিখ- ২৩/০৩/২০২৫-ইং।  এ ঘটনায় সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ওই সময় অধিকাংশ পত্র পত্রিকার শিরোনাম হয় “মোবাইল না দেয়ায় মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্রের হাতে পিতা খুন”।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে