ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নিন্মামানের সামগ্রী দিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন উপজেলার একাধিক সড়কে চলমান কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সড়ক সংস্কারের নামে ব্যবহার করা হচ্ছে বালি, ইট ও খোয়াসহ নিম্নমানের সামগ্রী। কিন্তু কাজ হচ্ছে না সরকারী নিয়ম অনুযায়ী। বালুর পরিবর্তে মাটি, নিম্নমানের পুরোনো ইটের খোয়া ও তার অবশিষ্ট অংশের ধুলোবালি দিয়ে কাজ হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের কাজ তদারকিতে উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও স্বজনপ্রীতি থাকায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এভাবেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে সরকারের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাচ্ছে। এসব সড়কে বালু ফিলিং, মেকাডোম এর কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় অল্পদিনেই রাস্তাগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে চলমান কাজের মধ্যে উপজেলার বগুড়া ইউনিয়নের আওধা গ্রাম থেকে বগুড়া গ্রাম পর্যন্ত পৌনে ৩ কিঃ মিঃ সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা। জানা গেছে ঝিনাইদহের স্মার্ট কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কার্যাদেশ পেয়েছে। আবার উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রাম থেকে যোগীপাড়া গ্রাম পর্যন্ত ২ কিঃ .মিঃ সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৮ লক্ষ টাকা কার্যাদেশ পেয়েছে ঝিনাইদহের বাংলাদেশ ট্রেডিং এন্ড কর্পোরেশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেইসাথে উপজেলার নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের বকশীপুর গ্রাম থেকে বাগুটিয়া গ্রাম পর্যন্ত ২ কিঃ মিঃ এ সড়কের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি টাকা। কার্যাদেশ পেয়েছে ঝিনাইদহের লিটন ট্রেডার্স । এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আরো কিছু কাজ চলমান রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কগুলোর নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে একেবারেই নিম্নমানের ইট, বালি, খোয়াসহ অন্যান্য সামগ্রী। রাস্তার এজিংয়ের দু’পাশের ইট সিডিউল অনুযায়ী ব্যবহার করা হচ্ছে না। এতে করে অল্প বৃষ্টি হলেই নির্মাণাধীন সড়কটি ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। রোলার না করেই ইচ্ছামত বালু খোয়া ফেলা হচ্ছে। রাস্তায় ব্যবহারের অনুপযুক্ত সারি সারি খোয়া ও বালুর স্তুপ সাজিয়ে রাখা হয়েছে এবং সেখান থেকে রাস্তায় পর্যায়ক্রমে ফেলা হচ্ছে। সড়কটি নির্মানে ঠিকমত পানি ব্যবহার করা হচ্ছে না। ঠিকাদার ইচ্ছামত কাজ করে চলেছে।কাজ বুঝে নেওয়ার মত কাউকে চোখে পড়েনি।
আওদা গ্রামের বাসিন্দা সুজন কুমার বলেন, এই রাস্তায় যে ইটের পচা খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে রাস্তাটি বেশিদিন টিকবে না। আমরা গরু নিয়ে যাওয়ার সময় গরুর পায়ের তলায় খোয়া পড়ে ভেঙে গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে।
রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা ফারুক হোসেন বলেন, আমাদের এ রাস্তার কাজ খুবই নিন্মামানের সামগ্রী দিয়ে হচ্ছে। এখানে ইট ও বালুর অবস্থা ভাল না। এভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরী করলে তা টেকসই হবে না।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্মাট কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার নান্নু বলেন সড়কটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে বলেন, দুই-এক গাড়ি খোয়া নিম্নমানের যেতে পারে তবে বেশীরভাগ খোয়াই ভাল। আপনারা চিন্তা করবেন না আপনাদের সাথে কথা হবে।
আওধা থেকে বগুড়ার কাজের দায়িত্বে থাকা এস ও আলমগীর হোসেন বলেন, কিছু জায়গায় রোলার না করে বালু খোয়া ফেলা হয়েছিল আমরা শোনামাত্রই কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।বর্তমান কাজ বন্ধ আছে।
উপজেলা প্রকৌশলী রুহুল ইসলাম বলেন সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের মালামাল সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি আমি শুনেছি এবং কাজের সাইট থেকে নিম্নমানের মালামাল সামগ্রী সরিয়ে ভালো মানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার জন্য স্ব স্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।