পর্যটন শহরের নতুন গলারকাঁটা পৌর কমিউনিটি পুলিশ

এফএনএস (বলরাম দাশ অনুপম; কক্সবাজার) : | প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
পর্যটন শহরের নতুন গলারকাঁটা পৌর কমিউনিটি পুলিশ

কক্সবাজার পৌর এলাকায় সড়কে যানজট নিরসনে নিয়োগ দেওয়া হয় পৌর কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের। গত ৫ আগস্টের পর সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ট্রাফিক পুলিশের সাথে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতেও কাজ করতে দেখা যায় পৌর কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদের। কিন্তু যাদের কাজ ছিলো সড়ক যানজটমুক্ত রেখে পৌরবাসীকে স্বস্তিতে রাখা এখন তারাই হয়ে উঠছে পৌরবাসীর গলার কাঁটা। অভিযোগ উঠে, সড়কে টমটম অটোরিকশা থামিয়ে টাকা দাবি করে পৌর কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা। দাবিকৃত টাকা দিলে ছেড়ে দেয় অন্যথায় চাবি জব্দ করে ট্রাফিক পুলিশকে সোপর্দ করে তারা। এদিকে শহরে বেড়েছে অবৈধ টমটম অটোরিকশার বিচরণ। তবে অবৈধ এসব যানবাহনে দৌরাত্ম থামানোর সুযোগ নিয়েই প্রতিনিয়ত হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা।

তথ্য বলছে, পৌর কমিউনিটি পুলিশের মোট সদস্য রয়েছে ১৩ জন। যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকের নেই ট্রাফিক আইনের নূন্যতম ধারণা। ফলে দায়িত্ব নিয়ে চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ছেন তারা। তারা বেশিরভাগ সময় শহরের কলাতলী মোড়,পান বাজার সড়ক,গুণগাছতলা,থানা রোড়ে অবস্থান নিয়ে সুযোগ বুঝে চালকের কাছ থেকে টাকা আদায় করে।

অভিযোগের সত্যতা খুঁজতে গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে শহরের কলাতলী মোড়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যেখানে ট্রাফিক পুলিশের সাথে বেশ কয়েকজন পৌর কমিউনিটি পুলিশকে দেখা যায় লাইসেন্স বিহীন টমটম অটোরিকশা আটক করতে। কিছুক্ষণ পর টিম লিডার মোহাম্মদ ইউনুস ও রাফি একটি টমটম আটক করে ট্রাফিক বক্সের পাশে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন। এসময় ভিডিওতে ধরা পড়ে টমটম চালকের কাছে টাকা দাবি করে রাফি। পরে চালক পৌর কমিউনিটি পুলিশে সদস্য রাফির দাবিকৃত টাকা দিলে ছেড়ে দেয়া হয় টমটম অটোরিকশাটি। 

এরপর টাকা নেওয়া বিষয়ে রাফির সাথে কথা বললে, প্রথমে টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করলেও পরে বিভিন্ন বাহানায় অকপটে স্বীকার করেন তিনি। তবে রাফির দাবি শুধু ২০ টাকা নিয়েছে টমটম চালকের কাছ থেকে।

রাফি টাকা নেওয়ার সময় দেখা যায়, ঘটনার সময় রাফির পাশে ছিলো টিম লিডার মোহাম্মদ ইউনুস। কিন্তু টাকা নেওয়া বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে হঠাৎ রূপ পাল্টান তিনি। কক্সবাজার পৌর কমিউনিটি পুলিশে টিম লিডার মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন,আমাদের কাজ শুধু লাইসেন্স বিহীন টমটম ধরে নিয়ে ট্রাফিক পুলিশকে দেওয়া। তবে যারা টাকা নিচ্ছেন তাদের বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করবো।

শহরে পৌর কমিউনিটি পুলিশের দাপটে অতিষ্ট টমটম চালকেরাও। ভুক্তভুগী টমটম চালক সেলিম বলেন, গাড়ি আটকিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা দাবি করেন পৌর কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা। না দিলে গাড়ি আটকিয়ে হয়রানি করা হয় তাদেরকে। ভুক্তভোগী টমটম চালক আতাহার বলেন,গত কয়েকদিন আগে তার কাছ থেকে ৬০০ টাকা দাবি করে। পরে অনেক বাকবিতন্ডার পর ৪০০ টাকা দিলে ছেড়ে দেয় টমটম অটোরিকশাটি। 

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ট্রাফিক পুলিশের জনবল সংকটের কারণে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পৌর কমিউনিটি পুলিশে সদস্যদের সহযোগিতা নিয়েছেন তারা। তবে কারো বিরুদ্ধে টাকা আদায় করার অভিযোগ পেলেই টিম থেকে বাদ দেওয়া হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে