তানোরে প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে রাস্তার গাছ কর্তন ও চলাফেরায় বাঁধা দেবার অভিযোগ

মো: ইমরান হোসাইন; তানোর, রাজশাহী | প্রকাশ: ২ মে, ২০২৫, ১০:৪৬ এএম
তানোরে প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে রাস্তার গাছ কর্তন ও চলাফেরায় বাঁধা দেবার অভিযোগ
রাজশাহীর তানোরে সরকারি চলাচলের রাস্তার গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কামারগাঁ ইউপির মাড়িয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এঘটনায় আসাদুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি প্রভাবশালী মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রীকে বিবাদী করে মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও তানোর থানার ওসি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে সংঘর্ষ বলেও আশঙ্কা গ্রামবাসী। ফলে ঘটনাটি নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে মিমাংসা না হলে অনাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসির অভিমত। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পার হয়ে মাটির রাস্তা। রাস্তা সংলগ্ন পূর্বদিকে ছোট মাটির মসজিদ রয়েছে। রাস্তাটি বিলে নেমে গেছে। মসজিদ পার হয়ে উত্তর দিকে ওই মাটির রাস্তা আক্রোশ মুলুক ভাবে মিজানুর খনন করেছে ও সরকারি রাস্তার দুইটি আম গাছের চারাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলে রেখেছে এবং রাস্তা গর্ত হয়ে আছে। সেখানেই ছিলেন আলিমুদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তিনি জানান, আমার প্রকৃত বাড়ি বাগমারায়। তিনি বিগত ৪০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। তিনি এখানে আসার পর থেকে দেখছেন ওই রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাফেরা করে আসছে এবং বিলের জমি থেকে ফসল গাড়িতে করে তুলে নিয়ে আসে বাড়িতে। কিন্তু হঠাৎ করেই মিজান বলছে এসব আমার জায়গা। কিন্তু কোন কাগজ দেখাতে পারেননি তিনি। রিয়াজ উদ্দিন নামের ৮২ বছরের এক বয়োজ্যেষ্ঠ জানান, আমার জন্মের আগ থেকে এটি রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। পূর্ব দিকের বিলে যাওয়ার রাস্তা আতাউরের ব্যক্তিগত। তারপরও তিনি কখনো বাধা দেননি। মিজানের বাড়ির পশ্চিম দিকে মাটির মসজিদ রয়েছে। মসজিদে যাতে আমরা নামাজ না পড়তে পারি এজন্য বাথরুমের হাউজ খুলে রেখেছে। এটা কোন বিবেক বান ভালো মানুষের কাজ হতে পারার নয় বলে আক্ষেপ করেন তিনি। ওই এলাকার জিল্লুর ও জিয়াউর রহমানসহ অনেকে বলেন, এখন বিল থেকে পুরোদমে কাটা ধান তুলছে কৃষক। এসময় রাস্তা খনন করেছে মিজান। খনন করার কারণে ধান বোঝায় গাড়ি উলটে গিয়ে এক শ্রমিকের পা ভেঙে গেছে। তিনি আর কাজ করতে পারছেনা। মিজান, তার স্ত্রী ও ভাই জিয়ার ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পাচ্ছে না কেউ। তাদের ভয়ে পাড়ার লোকজন মসজিদে নামাজ পড়তে যায় না। গত শনিবার কয়েক গ্রামের মাতবর ও উভয়পক্ষের লোকজন ছাড়াও জায়গা মাপজোক করা আমিন এসেছিল। দীর্ঘ সময় সালিশ বিচার হওয়ার পর মাপজোক করে সীমানা নির্ধারণ করে খুঁটি পুটে দেয়। লোকজন চলে যাবার পর খুঁটি তুলে ফেলে। তারা কোনকিছুই মানতে চায় না। অথচ আতাউরের ব্যক্তিগত জায়গা দিয়ে চলাচল করা হয়। তিনি যদি এসব করত তাহলে মানা যায়। কিন্তু আতাউরের কোন সমস্যা না হলেও মিজানরা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে। অভিযোগে বলা হয়, বিবাদী মিজানের বাড়ির পার্শ্বে বাদি আসাদুজ্জামানের বাড়ি। গত ২০ এপ্রিল সকাল ৮ টার দিকে বিবাদী মিজান সরকারি রাস্তার মাটি কেটে তার জায়গায় ফেলছিল। এছাড়াও গত ২৭ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে বাদীর বাড়ির পূর্ব উত্তর পাশে থাকা দুটি আম গাছের চারা ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে উপড়ে ফেলে। বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকিসহ অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। এদিকে, গত ২৭ এপ্রিল আতাউর রহমান বাদি হয়ে মিজান ও তার ভাই জিয়াকে বিবাদী করে উপজেলা নির্বাহীর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে আতাউর উল্লেখ করেন, মাড়িয়া মৌজার অন্তর্গত আরএস ১২৭, ১২৮ নম্বর খতিয়ানে ১২২ ও ১২১ দাগে বিবাদমান জায়গা নিয়ে উভয়পক্ষের আমিন দ্বারা মাপজোক করা হয়। কিন্তু সব মেনে নেয়ার পর বিবাদী মাতব্বরগণকে অপমান করে সবকিছু অমান্য করে। অভিযোগকারী আতাউর ও আসাদুজ্জামান জানান, মিজান ও জিয়া তারা কোন কিছুই মানতে চায় না। আবার জায়গার কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনা। সব কিছুই গায়ের জোরে করে। তাদের ভয়ে আমরা এক প্রকার আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করছি। নিরুপায় হয়ে ইউএনও ও ওসির নিকট অভিযোগ দিয়েছি। আমরা চায় প্রশাসনের মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান হোক। তবে, মিজানের ভাই জিয়াউর রহমানের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে রিং হলেও রিসিভ করেননি। পরে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। এব্যাপারে তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, অভিযোগ হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লিয়াকত সালমান জানান, রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার কোন সুযোগ নেই। তবে, অভিযোগ ব্যাপারে অবগত নয়। কিন্তু অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ই/তা
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে