খেলার মাঠে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা চীনের জন্য নতুন নয়। ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেবিল টেনিস দলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বিশ্ব কূটনীতির ইতিহাসে ‘পিং পং কূটনীতি’র সূচনা করেছিল চীন। সেই ঐতিহাসিক নজিরের পথ ধরেই এবার তারা ক্রীড়াঙ্গনে বন্ধুত্ব জোরদারের নতুন প্রয়াসে বাংলাদেশের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দেশটি। ক্রীড়া এখন আর শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ার অন্যতম কার্যকর হাতিয়ার। চীন ইতোমধ্যে আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার বহু দেশে ক্রীড়া সহায়তা দিয়ে নিজেদের কূটনৈতিক প্রভাব বাড়িয়েছে। এবার সেই চর্চা দক্ষিণ এশিয়াতেও বিস্তৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের চীনে সফর বাস্তবায়িত হলে তা হবে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো। চীন এবার বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে চীনে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে আমন্ত্রণ জানাতে যাচ্ছে। ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সম্প্রতি যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এই প্রস্তাব দেন। আসিফ মাহমুদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন, “চীনের রাষ্ট্রদূত ওয়াও ওয়েন জানিয়েছেন, বন্ধুত্ব আরও গভীর করতে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে চীনে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলতে আমন্ত্রণ জানানো হবে।” তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য চীন প্রস্তুত। অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রশিক্ষক ও প্রযুক্তি আদান-প্রদান, যুব ক্রীড়া কার্যক্রমে অংশীদারিত্বÑসব দিকেই চীন আগ্রহী। ক্রিকেট চীনে এখনো তেমন জনপ্রিয় না হলেও বাংলাদেশ দল সেখানে খেলে এ খেলাটির প্রসারেও ভূমিকা রাখতে পারে বলে। এখন দেখার বিষয়, এই আমন্ত্রণ কীভাবে বাস্তবায়ন হয় এবং কবে নাগাদ প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করা যায়। তবে এটুকু নিশ্চিত, ‘পিং পং কূটনীতি’র পাঁচ দশক পর ‘ক্রিকেট কূটনীতি’ হতে যাচ্ছে চীনের নতুন পদক্ষেপ।