অবহেলার এক দশক-রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের স্থবিরতা কার ব্যর্থতা?

এফএনএস | প্রকাশ: ২ মে, ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম
অবহেলার এক দশক-রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের স্থবিরতা কার ব্যর্থতা?

দশটি বছর পেরিয়ে গেলেও আজও রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের নিজস্ব ঠিকানা নেই। নেই স্থায়ী ভবন, নেই প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ, নেই আধুনিক ল্যাব কিংবা আবাসন সুবিধা। অথচ এই মেডিকেল কলেজটি প্রতিষ্ঠার পেছনে ছিল একটি মহৎ উদ্দেশ্যÑপার্বত্য চট্টগ্রামের জনপদের মানুষের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং পিছিয়ে পড়া পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার পথ সহজ করা। ২০১৪ সালে যখন রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের সিসিইউ ভবনে কলেজটির অস্থায়ী যাত্রা শুরু হয়, তখন হয়ত কেউ কল্পনাও করেননি, এক দশক পরেও তার শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ সংকটে বাইরে দাঁড়িয়ে ক্লাসের জন্য অপেক্ষা করবে। যেখানে প্রয়োজন ১৬টি শ্রেণিকক্ষ, সেখানে আছে মাত্র পাঁচটি। নেই মানসম্পন্ন ল্যাব বা ছাত্রাবাস। শিক্ষক সংকটও প্রকট। শিক্ষার্থীরা মেধা দিয়ে এগিয়ে যেতে চাইলেও, প্রতিষ্ঠানটির কাঠামোগত দীনতায় তাদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আরও উদ্বেগজনক ব্যাপার হলো, প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ ও মাটি পরীক্ষা শেষে প্রকল্পের নকশা প্রস্তুত হলেও ‘ডিপিপি’ এখনও একনেকের অনুমোদনের অপেক্ষায় পড়ে আছে। প্রশ্ন জাগেÑএকটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, যার সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো মৌলিক অধিকার জড়িত, তা কেন এইভাবে আটকে থাকবে? এ অব্যবস্থার দায় কার? কেন বছরের পর বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকবে একটি মেডিকেল কলেজের স্বপ্ন? কতটা উপেক্ষা করলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়? সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প যখন রূপ পাচ্ছে বিস্ময়কর গতিতে, তখন রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের মতো একটি প্রতিষ্ঠান স্থায়ী রূপ না পাওয়া অত্যন্ত লজ্জার। পার্বত্য অঞ্চলের প্রতি কেন্দ্রীয় প্রশাসনের মনোযোগ কতটা সীমিত, এই উদাহরণ তার অন্যতম প্রমাণ। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং পরিকল্পনা কমিশন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি যেন অবিলম্বে একনেক সভায় অনুমোদন পায়Ñএটাই এখন সময়ের দাবি। এটি কেবল একটি অবকাঠামো নির্মাণ নয়, এটি একটি অঞ্চলকে মর্যাদা ও সমান সুযোগ দেওয়ার প্রতীক। রাঙামাটির ভবিষ্যৎ চিকিৎসকরা আর যেন ‘অস্থায়ী’ পরিচয়ে ক্লাস করতে না হয়Ñএই প্রত্যাশাই রইল।