বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের খালাতো ভাই নীলফামারী-০১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনকে নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে রংপুর বিভাগ অচল করে দেওয়ার হুশিয়ারি দেন নীলফামারীর ডোমার ও ডিমলা উপজেলা বিএনপি ও এর সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তার মুক্তির দাবীতে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আজ রবিবার দিনব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে নেতাকর্মীরা। গত কয়েকদিন ধরে তারা এমনি কর্মসুচী পালন করে আসছেন। আজ রোববার (৪ মে) বেলা ১২ টায় ডোমার ও ডিমলা উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভ মিছিল, মানব বন্ধন ও সমাবেশ করে। ডিমলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সাধারন সম্পাদক বদিউজ্জামান রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী প্রধান প্রমূখ।
এদিকে বেলা ১২ টায় একই কর্মসূচী পালন করেছে ডোমার উপজেলা বিএনপির সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ডোমার বাজার রেলঘুন্টি মোড়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেয়াজুল ইসলাম কালুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সাধারন সম্পাদক আখতারুজ্জামান সুমন, পৌর বিএনপির সভাপতি আনিছুর রহমান আনু, সাধারন সম্পাদক মোজাফফর আলী প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। তার জনপ্রিয়তার কারণে ১/১১ সময় তুহিন ভাইয়ের নামে ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করা হয়। যদি তুহিন ভাইকে অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে রংপুর বিভাগ অচল করে দেওয়ার হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
জানা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে নীলফামারী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরীকে নীলফামারী জেলার উন্নয়নের রুপকার হিসাবে জেলাবাসীর কাছে পরিচিত। ৪ দলীয় জোট সরকারের সময় এ জেলায় তিনি ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত করেন। তিনি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যাসোসিয়েসন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) মহাসচিব। যার সভাপতি ছিলেন, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। ১/১১ সরকারের দুদক প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে তার বিরুদ্ধে সে সময় কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে গুলশান থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। এর ফলে ২০০৭ সালে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাস জীবন কাটান তিনি। এ সময় তার স্ত্রী প্রবাসে মারা গেলেও তিনি দেশে এসে দাফন কাফনে অংশ নিতে পারেন নি। জুলাই গন-অভ্যুথ্বানের পর ২২ শে এপ্রিল দেশে আসেন তিনি। এর মধ্যে কর ফাঁকির মামলায় ২০০৮ সালে পৃথক দুটি ধারায় ৩ বছর ও ৫ বছরসহ মোট ৮ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন আদালত। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বিধায় তাকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। এছাড়া অবৈধ সম্পদের মামলায় ২০০৮ সালে তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণার দীর্ঘ ১৭ বছর পর তিনি গত ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।