কর্মপরিবেশ হোক মানসিক স্বাস্থ্য সহায়ক

এফএনএস
| আপডেট: ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:৫৯ এএম | প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:০১ এএম
কর্মপরিবেশ হোক মানসিক স্বাস্থ্য সহায়ক

স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য সুস্থ শরীরের পাশাপাশি সুস্থ মন সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে দরকার একটি সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ। কাজে ব্যস্ত থাকলে মানুষের মন ভালো থাকে। আবার মন সুস্থ থাকলে কর্মজীবন হয় আনন্দমুখর। কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে যেমন মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে না, তেমনই মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে কর্মদক্ষতা বিঘ্নিত হয়। প্রত্যেকেই জীবনের দীর্ঘ সময় কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত থাকি। কর্মক্ষেত্র আমাদের জীবন ও জীবিকার নির্ভরযোগ্য স্থান। কর্মের মাধ্যমে আমরা নিজে বাঁচি এবং পরিবারকে বাঁচাই। কর্মক্ষেত্র সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ পাওয়ার অধিকার সবার রয়েছে। আর এ স্বাস্থ্যের একটি প্রধান অংশ হলো মানসিক স্বাস্থ্য। মন ও মানসিক স্বাস্থ্য সঠিক না থাকলে মানুষের কর্মস্পৃহা, কর্মোদ্দীপনা বিনষ্ট হয়ে যায়, হয়ে পড়ে কর্মহীন, কর্মচ্যুত এবং হারায় তার কর্ম (চাকরি)। ফলত তার ও তার পরিবারের জীবনে নেমে আসে অমানিশার কালোরাত্রি। পৃথিবীতে শুধু উদ্বিগ্নতা ও বিষণ্নতা এর কারণে প্রতিবছর ১২ বিলিয়ন কর্মদিবস নষ্ট হয়। কোনো কোনো কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ (যেমন : হয়রানি, বুলিং, অপদস্থ, অসহযোগিতা) ইত্যাদি কারণে মানুষের মনে তৈরি হয় মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে তার মনে সৃষ্ট হয় হীনম্মন্যতা, মানসিক চাপজনিত সমস্যা, উদ্বিগ্নতা, বিষণ্নতা, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্ব সমস্যা, অন্যান্য গুরুতর মানসিক রোগ, বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতা। কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচক পরিবেশের কারণে আবেগগত সমস্যা ও মনের ওপর দীর্ঘমেয়াদি চাপ পড়ে। কর্মক্ষেত্রে এসব মানসিক প্রতিকূলতা একজন ব্যক্তি ও পরিবারকে পথে নামিয়ে দিতে পারে। বিষয়টি আমাদের দেশের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ এজন্য, আমাদের দেশে একটি পরিবারে এক বা দুজন কর্মজীবী থাকেন। নারী কর্মজীবীদের জন্য নিরাপত্তাহীনতা আরও প্রকটভাবে দেখা যায়। এসব সমস্যার কারণে মানুষের মধ্যে বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও চাপজনিত রোগ হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মানুষ আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে ওঠে। অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ২০১৮-১৯ সালে দেশে জরিপ চালায়। তাতে দেখা যায়, দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছেন। ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোরদের মধ্যে মানসিক রোগাক্রান্তের হার ১২ দশমিক ৬। একটি সুস্থ জীবনের জন্য একটি সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যবান্ধব পরিবেশ অপরিহার্য। আমাদের মানসিক চাপ মুক্ত থাকা, হাসিখুশি থাকাসহ একে অপরের সহমর্মী হওয়া প্রয়োজন। এতে কর্মজীবী বাঁচবেন, বাঁচবে তার পরিবার। কর্মক্ষেত্রে কিছু বিনোদন, সাংস্কৃতিক চর্চা, সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।