কালীগঞ্জে তিন পুলিশ মারপিটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পুলিশের উপর হামলা ও মারপটের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ১৪ বছরের এক কিশোরী উদ্ধারে এসে মারপিটের শিকার হন যশোর কোতয়ালী থানার তিন পুলিশ সদস্য। সোমবার বিকালে কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন বাকুলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, যশোর কোতয়ালী থানার অধিন চাঁচড়া পুলিশ ফাড়ির এএসআই তাপস কুমার পাল, কনেস্টবল রাবেয়া খাতুন ও ফারজানা খাতুন।

এ ঘটনার পর রোববার রাতেই পুলিশ বাদি হয়ে কালীগঞ্জ পৌর যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক আছাদুজ্জামান আসাদ সহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে ৫০ থেকে ৬০ জনকে অজ্ঞাত রেখে এ মামলা করা হয়। কালিগঞ্জ থানার মামলা নং ০৫। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই শামিম হোসেন। রাতেই পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ওই গ্রামের মোঃ রাজু আহমেদ, মামুন হোসেন, আতিকুল ইসলাম মিন্টু ও আব্দুর রহিম বিশ্বাস। এদিকে পুলিশি অভিযানের খবরে বাকুলিায়ার অধিকাংশ নারী-পুরুষ গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, সম্প্রতি বাকুলিয়া গ্রামের ইমদাদুল ইসলামে ভাইরা যশোর কোতয়ালী থানার হামিদপুর গ্রামের মৃত আতিয়ার হোসেনের ছেলে সুজন হোসেন যশোর থেকে অপ্রাপ্ত বয়স্ক এক মেয়েকে নিয়ে এসে পরিবারের অমতে বিয়ে করে। বিয়ের পর সুজন ওই মেয়েকে নিয়ে বাকুলিয়া গ্রামের ইমদাদুল ইসলামের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। এ ঘটনায় মেয়ের পরিবার যশোর কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর যশোর থানার পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরের পর কালীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগীতায় মেয়েটিকে উদ্ধারে ওই গ্রামে যায়। বাকুলিয়া গ্রামের ইমদাদুলের বাড়িতে গিয়ে ভিকটিম মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় পুলিশের উপর হামলা করে এবং বেধড়ক মারপিট করে। এসময় তারা পুলিশের কাছ থেকে ভিকিটিম মেয়েকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি ঘটনাস্থলে পৌছে আহত পুলিশ সদস্য ও ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এরমধ্যে আহত পুলিশ সদস্যদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এসময় পুলিশ সদস্যদের মার ঠেকাতে গিয়ে আহত হন কালীগঞ্জ পৌর যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক আছাদুজ্জামান আসাদের স্ত্রী মোছাম্মদ মাছুরা খাতুন। 

আহত কনেস্টবল রাবেয়া খাতুন জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় কয়েকজন ৬ থেকে ৭ জন পুরুষ এসে আমাকে বলে হাত ছেড়ে দাও। হাত না ছাড়াই আমাকে এবং আমার সাথে থাকা নারী কনেস্টবলকে মারপিট শুরু করে। তারা আমাদের বেধড়ক মারপিট করে। 

এ ঘটনায় জানতে চাইলে যশোর কোতয়ালী থাকার ওসি  আবুল হাসনাত বলেন, আপনি কালীগঞ্জ তানার ওসির সাথে যোগাযোগ করেন। আমি কিছুই বলতে পারবো না বলে ফোন রেখে দেন। 

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, যশোর কোতয়ালী থানার পুলিশ কালীগঞ্জ থানার সহযোগীতায় বাকুলিয়া গ্রামের ১৪ বছরের কিশোরিকে উদ্ধারে গেলে হামলার শিকার হয়। খবর পেয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় রাতেই যুবদল নেতা আসাদুজ্জামান আছাদকে এক নম্বর আমাসি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার পর রাতেই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।