দিনাজপুরের বিরামপুরে যেখানে-সেখানে পশু জবাই করে মাংস বিক্রয় করা হচ্ছে দেদারছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছেনা কেউ। ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়াই জবাই করা পশুর মাংস প্রতিটি হাট-বাজারে বিক্রয় করা হলেও কতৃপক্ষ যেন দেখেও দেখছে না। ভেটেরিনারী সার্জনের পরীক্ষার পর পশু জবাই করার নিয়ম থাকলেও মানা হয় না কোন নিয়ম। ফলে বিভিন্ন রোগ ও ভাইরাস আক্রান্ত পশু জবাই করে মাংস বিক্রয় করা হয় কি না তা জানার কোন উপাই থাকেনা। অপরদিকে বেশীরভাগ হটি-বাজারে কসাইখানা না থাকায় নিয়ম না মেনেই যে যার মতো যেখানে খুশি পশু জবাই করে। বিরামপুর পৌরসভায় একটি কসাইখানা থাকলেও পৌরসভার বিভিন্ন পয়েন্টে পশু জবাই করে মাংস বিক্রয় করা হচ্ছে। পশু জবাইয়ের পর বর্জ্যও ফেলা হয় যত্রতত্র। এতে পরিবেশ হয় দূষিত। নির্দিষ্ট কসাইখানায় নিয়মিত পশু জবাই না হলেও সেখানে রয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। অধিকাংশ মাংস বিক্রয়ের দোকানগুলো অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা। নেই কোন স্যানিটেশন ব্যবস্থা। শহরের পূর্বজগন্নাথপুর মহল্লার এক বাসিন্দা বলেন, বাজারে মনিটরিং না থাকায় যে যার মতো করে মাংস বিক্রয় করেন। রোগাক্রান্ত পশুর মাংস জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকী হলেও এসব প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষের যথাযথ তৎপরতা দেখা যায়না। শহরের বকুলতলা মোড়ের মহসীন আলী জানান, “গবাদি পশু হাট-বাজারে বিক্রয় করার পূর্বে নিবন্ধিত চিকিৎসক দিয়ে পরীক্ষা করা প্রয়োজন। তা না হলে সাধারণ মানুষের মাঝে বিভিন্ন রোগ-ব্যধির সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।” খোঁজ নিয়ে জানা যায় প্রতিদিন বিরামপুর পৌরসভার ফসি মার্কেটের সামনে ২টি পয়েন্টে, পোষ্টঅফিস মোড়ে, নতুনবাজারে, কলাবাগানে, আল আমিন মার্কেটের সামনে, হাজী মার্কেটের সামনে, পূর্বপাড়া মোড়ে, পুরাতন বাজারে, কলেজ বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই করে মাংস বিক্রয় করা হয়। বিরামপুরের বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এসব মাংসের দোকানে রাখা জবাই করা পশুর মাংসের উপর নেই কোন সিল। এক মাংস বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান যে, “বিরামপুর পৌরসভার একমাত্র কসাইখানা অপরিচ্ছন্ন ও দূরে হওয়ায় নিজ বাড়ীতে পশু জবাই করে মাংস বাজারে এনে বিক্রয় করি। তবে কোন ডাক্তারী পরীক্ষা করা হয় না।” পৌরসভার বাইরের বাজারগুলিতে কোন নিদিষ্ট কসাইখানা না থাকায় সেসব বাজারে যেখানে-সেখানে পশু জবাই করে মাংস বিক্রয় করা হয়। এ বিষযে জানতে চাইলে বিরামপুর পৌরসভার সচিব কামাল হোসেন বলেন,“এ বিষয়ে আমার আগে জানা ছিলনা। আমি আজকেই জানলাম, অতি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়াহবে।”
পৌরসভার প্রশাসকের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনিম আওন মুঠোফোনে জানান,“যেখানে-সেখানে পশু জবাই করে মাংস বিক্রয়ের কোন সুযোগ নেই। যথাযথ বিধি মেনে নির্দিষ্ট স্থানেই পশু জবাই করে মাংস বিক্রয়সহ প্রযোজনীয় ব্যবস্থা অতি দ্রুত নেয়া হবে।”
উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার বিপুল চক্রবতী বলেন, “বিরামপুরের যেখানে সেখানে ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়াই পশু জবাই হওয়ার বিষয়ে আমি অবগত আছি। এ বিষয়ে আমি নিজেও উদ্বিগ্ন। পৌর কর্তৃপক্ষ আমাকে জানালে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারি।”