তালতলীতে জেলেরা চাল পায়নি নিষেধাজ্ঞার ২৫ দিনেও

এফএনএস (মোঃ আব্দুল মোতালিব; তালতলী, বরগুনা) : : | প্রকাশ: ১০ মে, ২০২৫, ১২:১৩ পিএম
তালতলীতে জেলেরা চাল পায়নি নিষেধাজ্ঞার ২৫ দিনেও

সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার ২৫ দিন পার হলেও ভিজিএফের (খাদ্য সহায়তা) চাল পায়নি বরগুনার তালতলী উপজেলার ৮ হাজার ৭৯৯ জন নিবন্ধিত জেলেরা। খাদ্য সহায়তার চাল না পেয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে তারা ।

জেলেরা বলছেন, বছরজুড়ে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সরকার নামমাত্র খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল দিলেও তা অধিকাংশ জেলেরা পাননি। আবার অনেকে জেলে না হয়েও স্থানীয় জন-প্রতিনিধিদের মদদপুষ্ঠ হয়ে জেলেদের খাদ্য সহায়তার চাল নেওয়ায় প্রকৃত জেলেরা এ চাল পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন। এ বছর নিষেধাজ্ঞার ২৫ দিন পার হলেও চাল পায়নি কেহই।

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিবছরই সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় দুই ধাপে ৮৬ কেজি চাল বিতরণ করা হয়। সমুদ্রে মাছের উৎপাদন বাড়াতে ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হতো।

চলতি বছর উপকূলীয় জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে সময় সমন্বয় করে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। স্থানীয় মৎস্য সমিতি গুলোর উদ্যোগে এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছেন বরগুনার তালতলী উপজেলার ৮ হাজার ৭৯৯ জন নিবন্ধিত জেলেরা। তবে নিষেধাজ্ঞা প্রায় ১ মাস অতিবাহিত হলেও সরকারি বরাদ্দকৃত  ভিজিএফ এর চাল এখনও দেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞার আগে ফিশিং বোট নিয়ে উপজেলার ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে এসেছেন জেলেরা। ঘাটে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে শত শত নৌকা ও ফিশিং ট্রলার। ঘাটে নেই হাঁকডাক-কোলাহল। জেলেদের মধ্যে কেউ জাল বুনছেন কেউবা ঘাটে অলস সময় পার করছেন। কেউ আবার ট্রলার মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উপজেলার তেঁতুল বাড়িয়া এলাকায় জেলে আলতাফ হাওলাদার বলেন, 'এবছর ভারতের সঙ্গে মিল রেখে অবরোধ দেওয়ায় আমরা খুশি হলেও সরকারের বরাদ্দকৃত দেয়া চাল এখনও পাইনি। প্রতি বছর অবরোধের পর পরই আমরা  চাল পেতাম। কিন্তু এবছর এখনও চাল পাইনি। অবরোধের সময় আমাদের কর্মসংস্থানের কোন বিকল্প ব্যবস্থা নেই। তাই এখন অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো রকম দিন কাটছে।'

ট্রলার মালিক ও মৎস্য আড়তদার জালাল উদ্দিন বলেন, 'আমার ৩ টা ট্রলারে ৩০ জন স্টাফ আছে, তারা অনেকেই ব্যাংকের ঋণে জর্জড়িত। মাছ ধরে তারপর ঋণ পরিশোধ করে। এখন সাগরে অবরোধ থাকায় তারা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে জেলেদের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত ভিজিএফের চাল এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। এই জেলেদের চালটা দ্রুত দিয়ে দিলে কিছুটা হলেও তাদের কষ্ট দূর হতো।' উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন বলেন, 'নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে বাস্তবায়নে আমরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছি। এ বছরের বরাদ্দ এখনো আমরা পাইনি।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা বলেন, 'ভিজিএফের চাল আসামাত্রই জেলেদের মাঝে দ্রুত বিতরণ করা হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW