রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

বোরখা পরা নারী শিক্ষার্থীদের কাকের সাথে তুলনার অভিযোগ!

এম এম মামুন; রাজশাহী
| আপডেট: ১২ মে, ২০২৫, ০২:০২ পিএম | প্রকাশ: ১০ মে, ২০২৫, ০৩:৩৭ পিএম
বোরখা পরা নারী শিক্ষার্থীদের কাকের সাথে তুলনার অভিযোগ!
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্লাস চলাকালীন কালো বোরখা পরা নারী শিক্ষার্থীদের ‘কালো কাকের’ সাথে তুলনা করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মাস্টার্সের ‘বি’ গ্রুপের শিক্ষার্থীরা বিভাগের সভাপতি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।  অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বুধবার (৭ মে) সকাল ১০টায় ২০৪ নম্বর কক্ষে এটিএম রফিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ করেন। এসময় কালো বোরখা পরা শিক্ষার্থীদের ‘কালো কাকের’ সাথে তুলনা করে অপমান অপদস্ত করেন সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম।

এছাড়াও বিভাগের এক সিনিয়র শিক্ষকের সাথেও তিনি খারাপ আচরণ করেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষে থাকাকালীন বিভিন্ন সময় তাদের পরিবার, আর্থিক অবস্থা, পোশাক পরিচ্ছদ, শারীরিক গঠন ইত্যাদি বিষয়ে অশালীন মন্তব্যের শিকার হতেন, যা অনেক সময় শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে কষ্ট দিত। এছাড়া ‘পোশাক দেখলেই বুঝা যায় কোন পরিবার থেকে এসেছো’, বাবার কর্ম নিয়ে কটূক্তি করা, যাদের বাবা বিদেশে থাকে তারা তো মানুষ হয় না, শিক্ষার্থীদের টোকাই বলে সম্মোধন করা, দক্ষিণ বঙ্গের মানুষকে (বি-ক্লাস) বলে কটূক্তি করা, শিক্ষার্থীদের অশোভন ভাষায় তিরস্কার করা, শিক্ষার্থীদের রোল নাম্বার এবং নাম চিহ্নিত করে রাখাসহ আরও বিভিন্ন বিষয়ের কথা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, রফিকুল স্যারের নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার থাকার সময় তিনি শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করতেন না। আমাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করতে এবং পছন্দের শিক্ষার্থীর খাতায় নম্বর বেশি দিতেন। গত দুইদিন আগেও আমাদের সাথে ঝামেলা করেছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো ঝামেলা হয়নি।

আমার বিভাগের সিনিয়র এক শিক্ষকের সাথে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে । আর এটাকে কেন্দ্র করেই শিক্ষার্থীরা সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মুন্সি মঞ্জুরুল হক বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অভিযোগে বিষয়টিকে আমরা আমলে নিয়ে জরুরি একাডেমিক সভা ডাকি। সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চান এবং বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল স্বীকার করেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না বলে তিনি একাডেমিক মিটিংয়ে সকলকে আশ্বস্ত করেছেন।
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে