আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ঘোষণার পর নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুর বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল শনিবার (১০ মে) রাত সাড়ে ১১ দিকে নোয়াখালী পৌরসভার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের বাড়িতে ওই হামলা চালানো হয়। ৫ আগস্ট পরবর্তী নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু আত্মগোপনে রয়েছেন।
আবদুল ওয়াদুদের পরিবারের সদস্যরা জানায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেল তাদের বাড়িতে ঢোকে। প্রতিটি মোটরসাইকেলে দুই তিনজন করে ছিল। তিনি কিছু বুঝে উঠার আগেই ওই ব্যক্তিরা বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় তারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে একটি কক্ষে ঢ়ুকে আশ্রয় নেন এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে ফোন করেন।
ওয়াদুদের স্ত্রী সাবরিনা মাহজাবিন জয়ন্তী অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা বাড়ির নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় প্রতিটি কক্ষে হামলা ভাঙচুর ও মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তারা বাড়ির সামনে রাখা তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে নিচ তলায় আগুন ধরিয়ে দেয়। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে এই তান্ডব চালানো হয়। তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়াদের ঘরেও হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা চলে গেলে চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে আগুন নেভান।
জয়ন্তী আরো জানান, হামলাকারীদের কাউকে তিনি চিনতে পারেননি। তবে তারা হামলার শুরুতে জিয়ার সৈনিক শ্লোগান দিয়েছিল। হামলা-ভাঙচুর করে তারা চলে যাওয়ার পর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিদর্শন করে গেছেন।
এ বিষয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো বলেন,আপনারা নিশ্চিত থাকেন এ হামলা-ভাংচুর বিএনপির কেউ করে নাই। আমাদের দল এ রকম হামলার সমর্থন করেনা। এটা অন্যান্য কেউ হতে পারে। এমন হয়ে থাকলে আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, রাতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর ছাত্র-জনতা শহরে আনন্দমিছিল করেছেন। একই সময় অন্য একটি অংশ আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল ওয়াদুদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান। হামলাকারীরা বাড়ির নিচতলায় সোফায় আগুন দিয়েছিলেন। তবে সেটি বাড়ির লোকজন নিভিয়ে ফেলেন। ওসি বলেন, ঘটনার বিষয়ে কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর তাঁরা শহরে আনন্দমিছিল করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল ওয়াদুদের বাড়িতে হামলার ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কেউ জড়িত নন।