বাগমারায় ত্রাণের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ

মো: হেলাল উদ্দীন; বাগমারা, রাজশাহী : | প্রকাশ: ১৩ মে, ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
বাগমারায় ত্রাণের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ

রাজশাহীর বাগমারার গণিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগে বঞ্চিত কৃষকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। সোমবার (১২ মে) সকাল ১০ টায় ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক কৃষক হাসনিপুরে অবস্থিত গণিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জড়ো হয়ে সঁইপাড়া-ভবানীগঞ্জ সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা (বিএস) মামুনুর রশিদ ও ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মজনু মেম্বারের বিরুদ্ধে তারা এ অনিয়মের অভিযোগ তুলেন। কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন, বিএনপি নেতা শামসুজ্জোহা বাদশা, গোলাম মুর্তজা, আব্দুল জব্বার খাঁ, জাকিরুল ইসলাম, দুলাল হোসেন প্রমুখ।

তাঁরা তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ আনেন। হাসনিপুর গ্রামের আনিছার রহমান, নামাজগ্রামের সাজ্জাদ হোসেন, গঙ্গানারায়নপুর গ্রামের আব্দুল হালিম মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, শিলাবৃষ্টিতে পান বরজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর শেষ হয়ে গেছে, আমরা প্রায় পথে বসে গেছি অথচ আমাদের নাম ত্রাণের তালিকায় ঠাঁই হয়নি। কোনো রকম সাহায্য সহযোগিতা পাইনি।

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (বিএস) মামুনুর রশিদ, বিএস অজিত এবং ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার মিজানুর রহমান ওরফে মজনু মেম্বার তারা মাঠ পর্যায়ে না গিয়ে তদন্ত ছাড়াই অফিসে বসে ইচ্ছামতো কৃষকদের তালিকা তৈরি করেছে যেখানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বাদ পড়েছেন। পাশাপাশি যাদের কোনো ক্ষতি হয়নি, যাদের ফ্ল্যাট বাড়ি তাদেরকে এই ত্রাণ দেওয়া হয়েছে।

এবিষয়ে গণিপুর ইউপির চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কৃষি অফিস থেকে এই তালিকা করা হয়েছে। তালিকা প্রস্তুতে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিল না। শুধু আমার ইউনিয়ন পরিষদে ডিসি মহোদয় ত্রাণ বিতরণ করবেন সেটির আমি আয়োজন করেছি মাত্র। তবে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। পরে কাটছাঁটের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ৪৯১ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করা হয়েছিল, প্রাথমিকভাবে ১০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর তালিকা পুণরায় যাচাই বাছাই করে ৩৩৩ জনের মধ্যে এটি বিতরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, গত বৃহস্পতিবার, ৮ মে বিকেলে শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ৩৩৩ জনকে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার তালিকাভূক্ত এসব কৃষকদের মধ্যে এই চাল বিতরণ করেন।

গত ১ মে, শিলাবৃষ্টিতে গণিপুর ইউনিয়নের হাসনিপুর, মোহনগঞ্জ, নামাজগ্রাম, আচিনঘাট, গঙ্গানারায়ণপুর এলাকার পানবরজ, বাড়িঘরসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম, বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ডিএম জিয়াউর রহমান জিয়া এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক কামাল হোসেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ইউএনও মহোদয় তাঁদেরকে সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে