বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সময়মতো কৃষি পরামর্শ, উন্নতমানের বীজের ব্যবহার ও সার প্রয়োগ এবং আবহাওয়া অনুকূল নাথাকা, সঠিক সময়ে সেচ দিতে নাপারায় সব মিলিয়ে এবারের মৌসুমে আগৈলঝাড়া উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন দেখা গেছে। আজ (১৪মে) বুধবার সকালে সরজমিনে মাঠ ঘুরে দেখা যায় প্রায় ৭৫% জমির ধান কর্তন হয়েছে। কৃষকরা আশা করছে ২৩ তারিখের মধ্যে বাকি বোরো কর্তন সম্পন্ন হবে। এবারে উপজেলাল লক্ষ্যমাত্র ছিলো ৯৫০০ হেক্টর জমিতে কিন্তু চাষ হয়েছে ৯৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। ৬৫ হাজার মেট্টিকটন চাল লক্ষ্য মাত্র ধরা হলেও সেখানে ৬৮ হাজার মেট্টিক টন চাল উৎপাদন হবে। বাম্পার ফলনে কৃষকের ঘরে ঘরে বইছে উৎসবের আমেজ। সপ্তাহজুড়ে মাঠে মাঠে কর্তন শুরু হয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি ধান ২৮, ব্রি ধান ২৯, ব্রি ধান ৮৮, ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ৯২, ব্রি ধান ৯৬, ব্রি ধান ১০০, ব্রি ধান ১০১, বিনা ২৫ সহ একাধিক প্রজাতির বোরো ধান।
স্থানীয় কৃষক আজাহার বলেন, ধান আবাদে সেচের কিছুটা সমস্যা হয়েছে। তবে ফলন বাম্পার হয়েছে। আমার জমিতে ধান কাটা শুরু করেছি। আশা করছি ঝড়-বৃষ্টি না হলে আগামী ছয় থেকে সাত দিনের মধ্যে সব ধান ঘরে তুলতে পারবো। শুনেছি বাজারে দাম ভালো। আশা করছি এবার লাভ বেশি হবে।
স্থানীয় কৃষক আবু ফজল বখতিয়ার বলেন, জমিতে ধানের বাম্পার ফলন হলেও শ্রমিকের মজুরি বেশি। ধান কাঁটার জন্য একজন শ্রমিকে ৭শ থেকে ৮শ টাকা পর্যন্ত মজুরি দিতে হচ্ছে। তবে ফলন ভালো হওয়ায় ধান লাগানো, সেচ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের খরচ বাদ দিয়ে ভালো লাভ থাকবে বলে আশা করছি।
স্থানীয় কৃষক মাহামুদা বেগম বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আমি এবার দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। ধান এবার খুব ভালো হয়েছে। তবে তীব্র গরমে ধান কাঁটা একটু কষ্টদায়ক হচ্ছে। এ ছাড়াও ধান কাঁটা শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে। তারপরও সবমিলিয়ে ধানের ভালো মূল্য পাবো বলে আশা করছি।
আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিযূষ রায় বলেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে এবার বোরো ধানের চাষ হয়েছে। কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশকসহ বিভিন্ন কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। সার, কীটনাশক কোন সমস্যা না থাকলেও খালে পানি না থাকায় সেচে ঘাটতি ছিল। যার কারনে ধান পাকার সময় কিছু জমিতে ব্লাষ্টরোগ দেখাদিয়েছিলো। আমারা কৃষকদের বিনা মূল্যে ঔষধদিয়েছি। ধান কাটার শুরুতে বৃষ্টিতে কিছুধান নষ্টহয়েছে। সবমিলিয়ে ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকেরা কৃষিযন্ত্রপাতি সহজ ভাবে পেলে কৃষিযন্ত্রে আরো ব্যাবহার বাড়বে। সেই সঙ্গে ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশায় কৃষকরা উৎসাহের সঙ্গে আবাদ করেছেন।