শাহরিয়ার হত্যার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলে বিক্ষোভে, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৫ মে, ২০২৫, ০৪:৫৯ পিএম
শাহরিয়ার হত্যার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলে বিক্ষোভে, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যকে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চলছে টানা বিক্ষোভ, ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন, ধর্মঘট এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে বিরতি।

গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগা নিয়ে এক কথাকাটাকাটির জেরে ছুরিকাঘাতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে নেমে এসেছে শোক ও ক্ষোভের ছায়া।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ‘সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ডাক দেন। পাশাপাশি তারা প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকেও বিরত থাকার আহ্বান জানান। কলাভবন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানান তারা। বিকেল ৫টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তারা উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন।

এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা। কালো ব্যাজ ধারণ করে তারা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘ফাঁসি চাই’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’ প্রভৃতি স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠেন।

ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস অভিযোগ করেন, "আমরা বারবার ভিসিকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। প্রশাসনের নির্লিপ্ততা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী। এখন ভিসির পদে থাকা উচিত নয়।"

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, "নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ দরকার। শাহরিয়ারের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা না হলে আন্দোলন আরও বেগবান হবে।"

ঘটনার পর বুধবারই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং অর্ধদিবস শোক পালনের ঘোষণা দেয়। বৃহস্পতিবার তা পূর্ণ দিবসের ধর্মঘটে রূপ নেয়। প্রশাসনের এই প্রতিক্রিয়াকে অনেক শিক্ষার্থীই ‘প্রতিক্রিয়াশীল ও দায়সারা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

এদিকে, নিহত শাহরিয়ারের বড় ভাই শরীফুল ইসলামের দায়ের করা মামলায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন মাদারীপুরের মো. তামিম হাওলাদার (৩০), পলাশ সরদার (৩০) ও সম্রাট মল্লিক (২৮)। শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা পেশায় ভাসমান হকার এবং তারা নিয়মিত নেশায় জড়িত। তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত ইতিমধ্যে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে