উভয় ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে, আটক ২

লোহাগড়ায় হত্যাকান্ডের জেরে প্রতিপক্ষদের বাড়িতে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ

এফএনএস (রাজিয়া হাসান; লোহাগড়া, নড়াইল) :
| আপডেট: ১৭ মে, ২০২৫, ০১:২৮ পিএম | প্রকাশ: ১৭ মে, ২০২৫, ০১:২৪ পিএম
লোহাগড়ায় হত্যাকান্ডের জেরে প্রতিপক্ষদের বাড়িতে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ

নড়াইলের লোহাগড়ার  ইতনা ইউপির পার-ইচাখালি গ্রামে গত বুধবার খাজা মোল্যা(৩৫) হত্যাকান্ডের পর  কুমারডাঙ্গা গ্রামের ৮/১০ টি বাড়িঘরে ব্যাপকভাবে ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নীসংযোগ করা হয়েছে। লুট করা হয়েছে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, ঘেরের লাখ লাখ টাকার মাছ, গরু, ধান, চাল,কলাই,পাট সহ মূল্যবান আসবাবপত্র। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ইতনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হুসাইন শেখ ও ইতনা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ইয়ামুল ইসলাম শেখ কে আটক করেছে পুলিশ। স্কুল ও কলেজের নিরীহ ছাত্রদের আটক করায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

গ্রামবাসী, পুলিশ সহ নিহতের পরিবার জানায়, বুধবার(১৪ মে) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নবাব মোল্যার  ছেলে খাজা মোল্যা স্থানীয় কুমারডাঙ্গা  বাজারের একটি দোকানে বসে  চা পান করছিলেন। এসময় হঠাৎ দূর্বত্তরা পরিকল্পিতভাবে খাজা মোল্যাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে লোহাগড়া হাসপাতালে  চিকিৎসার জন্য নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার জানায় হাসপাতালে আনবার পথেই তার মৃত্যু হয়েছে। হত্যাকান্ডের পর নিরীহ  গ্রামবাসীদের বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে।

ভূক্তভোগী কুমারডাঙ্গা গ্রামের রাহাত শেখের স্ত্রী ফারজানা রইচ বলেন সিহানুক, আকাশ, বাবর আলী, আসমানী, ইরানের বৌ ফাতেমা সাহাদুল ও তার বৌ কর্ণ সহ প্রায় দেড়শো- দুশো জনে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর,লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করেছে। ১০টি ঘেরের মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। এছাড়াও ২৫ ভরি স্বর্ণ, ১৩ লাখ নগদ টাকা, ৮টি গরু নিয়ে গেছে তারা। বাড়ির অন্তত ৫০ লাখ টাকার দামি ফার্নিচার নিয়ে গেছে। আগুন দিয়ে  পুড়িয়ে দিয়েছে লাখ লাখ টাকার আসবাবপত্র। প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

শেখ রওশন আলীর স্ত্রী রওশনারা বেগম বলেন, গন্ডগল ফ্যাসাদ কোথায় হইছে আমরা জানিনা। আমার স্বামী অসুস্থ্য,ঘরে বিছানায় পড়া। হঠাৎ শুনলাম কে যেন খুন হইছে। এরপর দেখলাম বাবর আলী, আকাশ সাহাদুল, আবু শেখ, মকলেস মোল্যা, সুরুজ মোল্যা, নবা মোল্যার ছেলেরা, মেহেদি সহ ১৫০/২০০ জনে আমার বাড়িতে হামলা চালায়।  তারা আমার ২শ মণ ধুইনে,১শ মণ কলাই, ১শ মণ ধান, চাল, ৩ লাখ নগদ টাকা, ৭ ভরি স্বর্ণসহ দামি আসবাবপত্র নিয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই।  

শেখ আইয়ুব আলীর স্ত্রী ফারজানা আক্তার ববি বলেন,  আমরা এ হত্যার সাথে জড়িত না। অথচ  আমার বাড়িঘর পুড়ায় দেছে। বাবর আলী ও তার স্ত্রী, সাহাদুল, আবু শেখ, সিহানুক সহ অন্তত দেড়-দুশোজনে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভ্যাপক ভাংচুর,লুটপাট, অগ্নি সংযোগ করেছে।  ২০ ভরি স্বর্ণ, ৫ লাখ নগদ টাকা,  জমির দলিল, ১৩টি গরু, হাঁস-মুরগী, দামি ফার্নিচার নিয়ে গেছে। দুশো মণ পাট পুড়িয়ে দিয়েছে।  এছাড়াও ইতনা ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি শেখ পলাশ আলী, শেখ তিতাস আলী,আমির শেখের বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেছে দূর্বৃত্তরা। পার-ইচাখালি ও কুমারডাংগা গ্রাম পাশাপাশি।  নিহত খাজা মোল্যা আওয়ামী  লীগের সমর্থক ছিলেন। সে নাশকতা মামলার আসামী ছিলো।

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ  মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ভাংচুর,লুটপাট,অগ্নিসংযোগের ঘটনায়ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। পুলিশ অভিযুক্তদের আ্টকের জন্য অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশ ওই এলাকায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। দোষী কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে