রাজশাহী নগরীর আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করতে পুলিশকে বিএনপির স্মারকলিপি

এম এম মামুন; রাজশাহী : | প্রকাশ: ১৭ মে, ২০২৫, ০৫:৪৪ পিএম
রাজশাহী নগরীর আইনশৃঙ্খলার উন্নতি করতে পুলিশকে বিএনপির স্মারকলিপি
রাজশাহী নগরীতে আওয়ামী লীগের দোসর এবং অন্য অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি জোরদারের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। শনিবার (১৭ মে) দুপুর ১টার দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) সদর দপ্তরে গিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা। স্মারকলিপি দেওয়ার সময় রাজশাহী মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইটন, নগরের বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টু, রাজপাড়া থানার সাবেক সভাপতি শওকত আলী, শাহমখ্দুম থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ, মতিহার থানার সাবেক সভাপতি আসনার আলী, বোয়ালিয়া থানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম মিলু, রাজপাড়া থানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিগত কয়েক মাসে রাজশাহী নগরে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। শহরে যৌন হয়রানি বেড়েছে, বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, চাঁদাবাজির পরিমাণ বেড়েছে, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য ভয়াবহ রূপ নিয়েছে এবং অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এছাড়া, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে হামলাকারীরা ও তাদের পৃষ্ঠপোষকেরা পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তারা গ্রেপ্তার হচ্ছে না।স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের দায়িত্বশীল ও নিরপেক্ষ আচরণ অপরিহার্য। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে পুলিশকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে এবং প্রতিটি মামলার অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনতে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলাকারী, চাঁদাবাজ, অস্ত্রধারী, নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মী ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে কেউ দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে কাউকে জিম্মি করতে না পারে। এতে আরও বলা হয়, মাদক কারবারীদের কারণে যুবসমাজ ধ্বংসের মুখে। রাজশাহীর চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার ও মাদকের আড্ডায় নিয়মিত অভিযান বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। নগরে অল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিক খুনের ঘটনা ঘটলেও অধিকাংশ অভিযুক্ত এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভুগরইল এলাকায় এক যুবদল নেতার বাবাকে ও কাদিরগঞ্জে এক রিকশাচালককে হত্যার ঘটনায় জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে তাদের স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়। স্মারকলিপিতে রাজশাহী মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন বাবলুর বাসায় অগ্নিসংযোগ, গুলি ও লুটপাটের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়। এই ঘটনায় তার পরিবারের নারী ও শিশুরাও হামলার শিকার হন। রাজপাড়া থানায় মামলা দায়ের করা হলেও অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে উল্লেখ করে দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার এবং পরিবারটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পদক্ষেপ কামনা করেন নেতারা। তারা স্মরণ করিয়ে দেন, অপরাধীর কোনো দল নেই। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রত্যেক অপরাধীকেই আইনের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, নগরে কিশোর গ্যাং, ইভটিজার ও ছিনতাইকারীদের নতুন তালিকা তৈরি করে তা অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি রাত্রিকালীন পুলিশ টহল বাড়ানো, নিষিদ্ধ সংগঠনের ওপর নজরদারি জোরদার করা, ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেপ্তার এবং কমিউনিটি পুলিশিং কমিটিগুলো পুনর্গঠন করে তাদের কার্যক্রম গতিশীল করার আহ্বান জানান তারা। এ সময় মহানগর বিএনপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি শহীদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক শামীম রেজা, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি শুকুর আলী, নগর যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মাইনুর হক হারু, রাজপাড়া থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি শাহানুর ইসলাম মিঠু, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন বাবলুসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে