শেরপুরে কৃষকরা শুকনো মরিচ উৎপাদনে ঝুঁকেছে

এফএনএস (শাকিল আহমেদ শাহরিয়ার; শেরপুর) : | প্রকাশ: ১৭ মে, ২০২৫, ০৬:৪৮ পিএম
শেরপুরে কৃষকরা শুকনো মরিচ উৎপাদনে ঝুঁকেছে

শেরপুরের চরাঞ্চলে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। শেরপুর সদরের কামারেরচর ইউনিয়নের পয়স্তিরচর, গুচ্ছগ্রাম, ৬নং ও ৭ নং চর গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে চলছে মরিচ শুকানোর উৎসব। কৃষকের বাড়ির চালা থেকে উঠান, সবখানেই এখন চলছে মরিচ শুকানোর কাজ। সারি সারি মরিচের প্লট বিছিয়ে তা পরিচর্যায় ব্যস্ত নারী-পুরুষ। প্রতি বছরের মতো এ বছরও জেলার সিংহভাগ মরিচ উৎপাদন হয়েছে এই চরাঞ্চলে।

কৃষকরা জানান, কামারেরচর বুক চিড়ে বয়ে গেছে দশআনী নদী ও পুরাতন ব্রক্ষপুত্র নদ। প্রতিবছর বন্যায় নদী এলাকার এসব কৃষিজমিতে প্রচুর পলি পড়ে। বন্যার পর পানি কমে গেলে পলি পড়া সেই উর্বর জমিতে চাষ হয় মরিচ। কাঁচামরিচ বিক্রির পাশাপাশি একটা বড় অংশ ক্ষেতেই পাকানো হয়। এরপর সেই মরিচ রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় রান্নার অতিজরুরি উপাদান শুকনো মরিচ। মূলত চাহিদার কারণেই স্থানীয় চাষীরা প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে শুকনো মরিচ উৎপাদন করেন। যা নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি হয় অন্যান্য জেলায়।

জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি বছর শেরপুরে ১ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে মরিচ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ হাজার ১শ এক হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়। যেখানে ৬৫০ টন শুকনা মরিচ উৎপাদন হবে এবং হেক্টর প্রতি মরিচের গড় ফলন প্রায় ৩ টন।

৬নং চরের কৃষক জামাল উদ্দিন জানান, চরাঞ্চলের জমি মরিচ চাষে অত্যন্ত উপযোগী। মরিচ চাষে বিঘাপ্রতি খরচ ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। সেচ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিক খরচ বাদ দিয়ে ৩০ হাজার টাকার মতো লাভ থাকে।  গুচ্ছগ্রামের কৃষক হাসমত আলী জানান, বর্তমান বাজারে কাঁচামরিচের দাম তুলনামূলক অনেক কম। তাই আমরা শুকনো মরিচ উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছি। যেখানে কাঁচামরিচের দাম মণপ্রতি ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা। সেখানে শুকনো মরিচের দাম মণপ্রতি ৮ থেকে  ৯ হাজার টাকা। পয়স্তিরচরের কৃষাণী তাসলিমা আক্তার জানান, বর্তমান বাজারে কাঁচামরিচের দাম ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। এই দামে মরিচ বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হয়। তাই মরিচ ক্ষেতে পাঁকিয়ে পরে বিক্রি করি। ক্ষেতের পাঁকানো মরিচ বাড়ি নিয়ে পুনরায় ভালো করে রোদ দিতে হয়। রোদের তাপ বেশি থাকলে ১৫ দিন এবং কম থাকলে একমাস সময় লাগে শুকনো মরিচ বিক্রি উপযোগী হতে। তখন এই শুকনো মরিচ কেজিপ্রতি ২২০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা বিক্রি করা যায়।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শেরপুরে লাভজনক হওয়ায় দিন দিন শুকনো মরিচ উৎপাদনে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। চরাঞ্চলের কৃষকদের মরিচ চাষ বাড়াতে পরামর্শ দিয়ে নানা সহযোগীতা করছে কৃষি বিভাগ।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে