মসজিদ ভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ীকরণের দাবিতে মানববন্ধন

এফএনএস (আব্দুর রাজ্জাক, নীলফামারী) : | প্রকাশ: ১৮ মে, ২০২৫, ০২:৫৯ পিএম
মসজিদ  ভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ীকরণের  দাবিতে মানববন্ধন

নীলফামারীতে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৮ম পর্যায়) স্থায়ীকরণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ১৭ মে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ওই মানববন্ধন পালন করা হয়।

এ সময়।মউশিক কর্মকর্তা কর্মচারীরা বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকল্প  ৩২ বছর যাবৎ চলমান রয়েছে। মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৭ম পর্যায়) সমাপ্ত হয়। এ প্রকল্পের জনবলকে রাজস্বকরণ এবং চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে বকেয়া বেতন-ভাতা পবিত্র ঈদুল আযহার পূর্বেই প্রদান করার দাবি তোলা হয়। মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম একটি জননন্দিত প্রকল্প। সারাদেশে প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষাকেন্দ্রে ইমাম ও মহিলা শিক্ষক নিয়ে বেশ সুনামের সাথে কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৯৯৩ সাল থেকে চালু হওয়া এ প্রকল্প বিভিন্ন বাঁধা বিঘ্ন অতিক্রম করে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের ৭ম পর্যায় কার্যক্রম শেষ হয়। প্রকল্প শেষ হলেও -এর কার্যক্রম ১ জানুয়ারি  থেকে চলমান আছে।  ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধিকাংশ কাজ মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষক-শিক্ষিকা জনবলের মাধ্যমে হয়ে থাকে।  এ জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন একদমই অকার্যকর। দেশব্যাপী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনতার সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও নানাবিধ বৈষম্যের শিকার মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের জনবল। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির হার বৃদ্ধি করা, শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া রোধ, বয়স্কদের নৈতিকতা ও ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে আসতেছে প্রকল্পের  জনবল  । প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষক কেয়ারটেকারকে দ্রব্যমূল্যের এ বাজারে এখনও  চলতে হয় পাঁচ হাজার টাকার মাসিক ভাতায়। করোনার সময়ে সন্তানেরা যখন নিজ পিতা-মাতার পাশে আসার সাহস পায়নি তখন  জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাশ দাফনের কাজে এগিয়ে এসেছে মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গনশিক্ষার জনবল।  মউশিক জনবলের ভাগ্য পরিবর্তনে এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি বরং তাদের ভাগ্যকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলার মানুষের অভাব হয়নি। রাজস্ব তো দূরে থাক, সামান্য প্রকল্প পাশেও নানা অযুহাত দেখিয়ে মউশিক জনবলকে  সুবিধা বঞ্চিত করে আসছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে প্রতি বছর প্রায় এক কোটির উপর শিশু ও কিশোর মউশিক প্রকল্প থেকে শিক্ষা লাভ করছে। এ প্রকল্পের ইমাম-মুয়াজ্জিন জুম'আর প্রাক খুৎবায় সরকারি বিভিন্ন সংবাদ জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেয়। মাদক দ্রব্য দূরীকরণ, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ প্রতিরোধ, নারী নির্যাতন, শিশু পাচার, যৌন হয়রানি ইত্যাদি বিষয়ে জন সচেতনতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রকল্পের ১ম ও ২য় পর্যায়ে নিয়োগ প্রাপ্ত জনবল রাজস্ব খাতের আওতাভূক্ত হলেও ৩য় থেকে ৭ম পর্যায়ের জনবল এখনও রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। যদিও সরকারি নির্দেশনা ছিল ১৯৯৭ সালের পূর্বের সমস্ত প্রকল্পের জনবল মেয়াদ শেষে বিনাবাধায় রাজস্ব খাতভূক্ত হবে। কিন্তুু এ প্রকল্পের জনবলকে রাজস্ব খাতভূক্ত তো করাই হয়নি বরং বিভিন্ন সময়ে নানা অযুহাতে বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী তুল্য আউটসোর্সিং-এর আওতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য পাঁয়তারা চালানো হয়েছে।  ৩২ বছর যাবৎ চলমান এ প্রকল্পের জনবলকে রাজস্ব  খাতভূক্ত করা হচ্ছে না।  দুঃখ  দুর্দশায় পাঁচ মাস বেতন না পেয়ে জীবন অতিবাহিত করছে প্রকল্পের সকল জনবল। জেলা  প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নায়িরুজ্জামান  এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর  স্মারকলিপি প্রদান করেন  মউশিক কর্মকর্তা  কর্মচারীগন। জেলা প্রশাসক স্মারক লিপি  গ্রহণ করে প্রধান  উপদেষ্টা বরাবর পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন  প্রতিনিধিগণকে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে