কোনো সংকট ছাড়াই স্থানীয়ভাবে বরিশালে কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণ হবে। চাহিদার চেয়ে বেশি কোরবানিযোগ্য গরু থাকায় এবার উদ্বৃত থাকবে কোরবানির পশু।
রোববার দুপুরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বিভাগের ছয় জেলায় ছোট-বড় ২৭ হাজারের মতো খামারি কোরবানিযোগ্য ৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৮ পশু লালন পালন করেছেন। আর বিভাগে এবারের কোরবানিতে মোট পশুর চাহিদা ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৫২টি। ফলে সবমিলিয়ে চাহিদার পরেও উদ্বৃত্ত পশু থাকবে ৬৫ হাজার ২৯৬টি।
সূত্রে আরও জানা গেছে, বরিশালের খামারগুলোয় বছরজুড়ে বিভিন্ন জাতের গরু লালন পালন হয়েছে। এরমধ্যে বেশি দামে বিক্রির টার্গেট থাকে কোরবানি ঈদকে ঘিরে। তাই কোরবানি সামনে রেখে এখন খামারগুলোয় বিক্রয়যোগ্য পশুর যত্ন নেওয়া হচ্ছে। যেখানে দেশি গরুর পাশাপাশি সাহিওয়াল, দেশাল, আরসিসি, নেপাল, ফিজিয়ান, অস্ট্রেলিয়ান ও পাকিস্তানি সাহিয়াল জাতের গরু রয়েছে। বিভাগে কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ষাঁড়, বলদ ও গাভি মিলিয়ে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৭টি রয়েছে। আর এরমধ্যে ষাঁড় গরুই রয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ৯৬১টি। এছাড়া ৯ হাজার ৪০৬টি মহিষ, ১ লাখ ১২ হাজার ৪৬টি ছাগল ও ১২ হাজার ২৭৪টি কোরবানিযোগ্য ভেড়া রয়েছে।
বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. লুৎফর রহমান বলেন, কোরবানির আগে যাতে হরমোন, অ্যান্টিবায়োটিক বা কৃত্রিম কোন উপায়ে পশুকে মোটা তাজা করা না হয় সেজন্য খামারে নিয়মিত নজরদারি করছে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তিনি আরও বলেন, বরিশাল অঞ্চলে খামারে একসাথে অনেক পশু পালনের পাশাপাশি বাড়িতে ছোট আকারে একটি দুটি গরু কিংবা ছাগল পালন করেন অনেকে। ফলে এ অঞ্চলে হিসেবের চেয়েও অনেক বেশি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। যেকারণে এবার আর বিদেশী গরুর প্রয়োজন হবেনা। এবার এ অঞ্চলের স্থানীয় পশু দিয়েই কোরবানি সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। প্রতিটি পশুর হাটে পশু চিকিৎসকসহ মনিটরিং টিম কাজ করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিভিন্ন খামারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। অনেক খামারির পশু এরই মধ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে। আবার অনেকে হাট শুরুর অপেক্ষা করছেন। খামারিরা জানিয়েছেন, গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পরে কোরবানির পশুর দামে। তবে ভারতীয় গরু না আসলে কোরবানির বাজার স্থানীয় গরুর দখলে থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বিভাগের ছয় জেলায় প্রায় সাড়ে তিনশ’ টি কোরবানির পশুর হাট বসবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি প্রায় দেড়শতাধিক ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম হাটগুলোতে কোরবানিযোগ্য পশুর সুস্থতা পরীক্ষা করবে।