রাষ্ট্রদ্রোহ ও আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জেলগেটে (কারাফটক) একদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।
রোববার (১৮ মে) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম এস এম আলাউদ্দীন মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। একই থানায় দায়ের হওয়া আলোচিত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় তদন্তে তার সম্পৃক্ততা পাওয়ায় আদালতের নির্দেশে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তবে এ নির্দেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে শুরু হয় নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা। চিন্ময়ের শতাধিক অনুসারী আদালত প্রাঙ্গণে হামলা, ভাঙচুর ও স্লোগানে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি করে। প্রিজন ভ্যানে থাকা চিন্ময়কে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আটকে রাখা হয় আদালত এলাকাতেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেডের সাহায্যে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
সংঘর্ষ আদালত চত্বর ছাড়িয়ে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে চিন্ময়ের অনুসারীরা বলে অভিযোগ ওঠে।
সাইফুল ইসলামের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলা, বিচারপ্রার্থীদের ওপর আক্রমণ, আদালতের কার্যক্রমে বাধা এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে আরও পাঁচটি মামলা রুজু হয়।
এদিকে আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, “মামলার অগ্রগতির স্বার্থে তদন্ত কর্মকর্তারা চিন্ময় দাসকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন। আদালত প্রতিটি মামলায় একদিন করে অনুমতি দিয়েছেন।”
চট্টগ্রাম শহরের আইনজীবী মহলে ও সাধারণ মানুষের মাঝে চিন্ময় দাসকে ঘিরে উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, এমন সহিংস ঘটনাগুলোর দ্রুত বিচার না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।