জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের ‘টালবাহানা’ বন্ধ করে অবিলম্বে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সময়মতো নির্বাচন না হলে বিএনপি আন্দোলনে নামবে, আর সেই আন্দোলন ঠেকানো কারো পক্ষে সম্ভব হবে না।
রোববার (১৮ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে নবীন দলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুক বলেন, “এই সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের আশায়। কিন্তু নয় মাস পেরিয়ে গেলেও সে লক্ষ্যে কোনো অগ্রগতি নেই। সরকার নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছে এবং কারও কারও সুবিধা নিশ্চিত করতেই বিলম্ব করছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “জনগণের আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু নয় মাসে সরকারের কার্যক্রমে বোঝা গেছে, তারা জনগণের সেই প্রত্যাশার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি। বরং জনগণের সেই অর্জন ম্লান হয়ে গেছে।”
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফারুক বলেন, “আপনার কাছে সংসদ সদস্যের পদ, ঠিকাদারি বা লুটের টাকার ভাগ চাই না। আমরা চাই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। যারা শেখ হাসিনার আমলে রক্ত দিয়েছে, জেল খেটেছে, তাদের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই বলছি— দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের নেতা তারেক রহমান ধৈর্য ধরতে বলেছেন, আমরা ধৈর্য ধরছি। কিন্তু যদি এই ধৈর্যের ফল হয় নির্বাচন বিলম্ব, তাহলে সেই ধৈর্যের বাঁধ আমরা আর ধরে রাখব না। এমনকি যদি মহাসচিব বা স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও আমাদের থামতে বলেন, আমরা থামব না। আন্দোলন হবেই।”
ফারুক সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগ নিয়েও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও লুটপাট বন্ধ হয়নি। আবদুল হামিদকে যারা পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছেন, তাদের নাম প্রকাশ করতে হবে।”
দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচার সম্পর্কেও ক্ষোভ প্রকাশ করে ফারুক বলেন, “গতকালই শুনলাম ৯০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এখন তো শেখ হাসিনা ক্ষমতায় নেই— তাহলে এই টাকা কে পাচার করল? আমরা প্রতিদিন বলি, যারা এই অপকর্ম করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।”
ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি। বাংলাদেশের জনগণ আপনাকে আপনজন ভেবে সরকারে বসিয়েছে। সেই সম্মানের খাতিরে এখনই এই মুহূর্তে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করুন।”
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নবীন দলের সভাপতি হুমায়ূন আহমেদ তালুকদার। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।