বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, "নির্বাচনের কথা বললেই সরকার অখুশি হয়। সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা মনে করছেন যতদিন ইচ্ছে ততদিন তারা ক্ষমতায় থাকবে। যদি নির্বাচন না হয় তাহলে নির্বাচন কমিশনের দরকার কি?"
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে নির্বাচন নিয়ে কথা উঠলেই সরকার অস্বস্তি বোধ করে। সোমবার (১৯ মে) বিকেলে সিলেট শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে দলের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের কিছু উপদেষ্টার বক্তব্যে মনে হয় তারা আজীবনের জন্য ক্ষমতায় থাকতে চায়। অথচ নির্বাচন কমিশনের অস্তিত্বই তখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে যদি নির্বাচনই না হয়। একজন নারী উপদেষ্টা তো বলেছেন, গত বছরের ৫ আগস্টের ঘটনা ছিল নির্বাচনের চেয়েও বড়। এসব বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ জানাই।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) আলহাজ্ব জিকে গউছ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম. রাসেদুজ্জামান মিল্লাত এবং উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী ও এম.এ মালিক।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আওয়ামী লীগ ইতিহাসের নির্মমতম গণহত্যাকারী দলে পরিণত হয়েছে। তারা আজও ক্ষমা চায়নি। তাদের ডিএনএ-তেই গণতন্ত্র নেই, তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতার প্রশ্নই আসে না। জনগণ ইতোমধ্যে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে।”
তিনি দাবি করেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন, যা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করছে। বিএনপি না থাকলে দেশে আজও একদলীয় শাসন টিকে থাকত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তাঁর ভাষ্য, “তারেক রহমান ২০২৩ সালে যে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা দিয়েছিলেন, তা ছিল ফ্যাসিবাদের পতনের পূর্বাভাস। যারা গুম, খুন, অপহরণের মাধ্যমে দেশ চালায়, তাদের বিচার নিশ্চিত করতেই হবে।” এছাড়া ইশরাক হোসেনের শপথ বিলম্বিত হলে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম. নাসের রহমান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, শেখ সুজাত মিয়া, কয়সর এম আহমদ, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, হবিগঞ্জ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সূচনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা নুরুল হক। সূচনা বক্তব্য দেন তারিকুল আলম তেনজিন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
সিলেট বিভাগীয় বিএনপির অধীন জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সালাহউদ্দিন আহমেদকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। পরে তিনি হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করেন।