ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে সিলেটের জাফলং অঞ্চলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার পরপরই পিয়াইন নদীতে হঠাৎ পানি বাড়তে শুরু করে, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই জাফলংয়ের জিরো পয়েন্টসহ আশপাশের জনপদ প্লাবিত হয়।
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, নদীর পানি এমন বেগে আগে কখনও নামতে দেখা যায়নি। প্রবল স্রোতের কারণে নদী তীরবর্তী বসতি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো পড়েছে চরম ঝুঁকিতে। পানির তোড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে অনেক জায়গায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, খুব অল্প সময়ের মধ্যে পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি চলে আসে। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে জাফলংয়ের পর্যটন কার্যক্রম সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুধু জাফলং নয়, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাটেও নদী তীরবর্তী এলাকায় পানি প্রবেশ করছে দ্রুতগতিতে। এই অঞ্চলের অনেক গ্রামের কাঁচা বাড়িঘর ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সিলেট ও পার্শ্ববর্তী মেঘালয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় সিলেট ও ময়মনসিংহকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জরুরি সতর্কতা জারি করেছে। সেনাবাহিনী, রেড ক্রিসেন্ট ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা ইতোমধ্যে প্রস্তুত রয়েছে উদ্ধার তৎপরতার জন্য।
এদিকে, সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি লাগাতার বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড আশঙ্কা করছে-নদীগুলোর পানি উপচে নতুন নতুন এলাকাও দ্রুত প্লাবিত হতে পারে।
জনগণকে আতঙ্কিত না হয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উদ্ধারকারী নৌকা, জরুরি খাদ্যসামগ্রী ও প্রয়োজনীয় সহায়তা।