বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা দীর্ঘ লড়াইয়ে হাজারো মানুষ জীবন দিয়ে, লক্ষ লক্ষ মানুষ জেল-জুলুম সহ্য করে একটা পরিবর্তনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলাম। আজ সেই ক্ষেত্রে জুলাই-আগস্টে ছাত্র জনতার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। এদেশের মানুষ বহু বছর ধরে লড়াই করছে এক দফার দাবিতে। যখন জোট সরকারের অপসারণ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পূণ: প্রতিষ্ঠা হবে। আমাদের এই দাবি একটা অংশ অর্জিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো লজ্জাজনক, অপমানকর পলায়ন করতে হয়েছে ফ্যাসিবাদী সরকারকে। কিন্তু আমাদের দাবির মূল উদ্দেশ্য, যে কারনে আমরা ফ্যাসিবাদীর পতন চেয়েছিলাম সে গণতন্ত্র এখনো পূণ: প্রতিষ্ঠা হয়নি। আর এটা সম্ভব শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে। কারন ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে রাষ্ট্র ক্ষমতার হাত বদল হয় না। এই সবগুলো নির্বাচনে সংবিধানতো দুরের কথা কোন আইন পরিবর্তনেরও ক্ষমতা নাই। তাই সেই প্রতিষ্ঠানগুলো গণতন্ত্র পূণ: প্রতিষ্ঠার মাধ্যম হতে পারে না। মাধ্যম হলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যে জাতীয় সংসদ আইন বাঁচাতে পারে, আইন বদলাতে পারে, সংবিধান বদলাতে পারে। সেই সংসদ নির্বাচনের জন্য আমরা দাবি করেছি। আমরা সংস্কারও চাই। আমাদের চেয়ে বেশী সংস্কার বাংলাদেশে আর কেউ কখনো চাইনি।
বুধবার সকালে ময়মনসিংহ বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে সদস্য নবায়ন এবং প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ অভিযান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নগরীর টাউন হল এডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ ও সদস্য ফরম নবায়ন কমিটির সদস্য সচিব এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়ারেস আলী মামুন ও আবু ওয়াহাব আকন্দ, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েতুল্লাহ কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বর্তমান সরকারের সাফল্য-ব্যার্থতা নিয়ে এখনও প্রশ্ন তুলি নাই। কিন্তু বেশ কিছু বিষয়ে জনগণের মধ্যে কিছু প্রশ্ন সৃষ্টি হচ্ছে, সরকারে থেকে বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে কাজ করার। আমাদের ভালো লাগে না, কারণ আমরা সরকারটাকে পছন্দ করি।
তিনি বলেন, আমরা বিস্মিত হই নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল রায় দেওয়ার পরেও প্রশাসনিক ক্ষমতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে যিনি মেয়রের দায়িত্ব পেয়েছেন তাকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে না। সে নির্বাচন কমিশনকে এই অন্তবর্তী সরকার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী নিয়োগ দিয়েছেন, সেই নির্বাচন কমিশন তাদের স্বাধীনভাবে মতামত ব্যক্ত করলেও তাদের হুমকি দেয়ার জন্য ও ঘেরাও কর্মসূচি হচ্ছে। বিষয়গুলো ভালো দৃষ্টান্ত না।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের যে ৩১ দফা দিয়েছেন, সেখানে প্রত্যেকটা জায়গায় বলেছি, আমরা ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি করতে চাই। সে ভারসাম্য শুধু প্রধানমন্ত্রী আর রাষ্ট্রপতির না, বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগ, আইন বিভাগ, সংসদ, প্রশাসন, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, কেন্দ্রী সরকার, স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার অনেক কিছুর মধ্যেই ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়ে আসতে হবে।