দুই মামলায় ছয় দিনের রিমান্ডে মমতাজ বেগম, আদালত চত্বরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশ: ২২ মে, ২০২৫, ০২:২৩ পিএম
দুই মামলায় ছয় দিনের রিমান্ডে মমতাজ বেগম, আদালত চত্বরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

মানিকগঞ্জে হত্যা ও নাশকতার দুই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে ছয় দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রিমান্ড শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে সৃষ্টি হয় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি। পুলিশের কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যেও মমতাজকে লক্ষ্য করে ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। বিএনপি সমর্থক আইনজীবী ও নেতাকর্মীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করেন এবং তার শাস্তির দাবি জানান।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুলিশি প্রিজনভ্যানে করে মমতাজ বেগমকে মানিকগঞ্জ আদালতে আনা হয়। আদালত চত্বরে তাকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে হাজির করা হয়। এরপর হরিরামপুর থানায় হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক আইভি আক্তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে সিংগাইর থানায় করা হত্যা মামলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মুহম্মদ আব্দুন নূর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতের ওসি আবুল খায়ের জানান, ২০১৩ সালে সিংগাইর উপজেলার গোবিন্দল এলাকায় হরতালের সমর্থনে একটি মিছিলে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হন। দীর্ঘ এক দশক পর নিহত এক ব্যক্তির স্বজন মো. মজনু মোল্লা গত বছরের ২৫ অক্টোবর মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে, ২৯ অক্টোবর হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

রিমান্ড শুনানির সময় মমতাজের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তবে বাদীপক্ষের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজাদ হোসেন খান। শুনানি চলাকালে আদালতের ভেতরে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে।

মমতাজ বেগমকে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ ১২ মে রাতে গ্রেপ্তার করে। এর আগে ঢাকার বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হত্যা মামলাতেও তিনি চার দিনের রিমান্ডে ছিলেন।

উল্লেখ্য, মমতাজ বেগম ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। তবে চলতি বছরের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদের কাছে পরাজিত হন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, পদ–বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এবং বর্তমানে তার বিরুদ্ধে সিংগাইর ও হরিরামপুর থানায় একাধিক হত্যা ও নাশকতার মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে