সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত

বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে অপসারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশ: ২২ মে, ২০২৫, ০৩:০৫ পিএম
বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে অপসারণ

বিচার বিভাগে শৃঙ্খলা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার পদক্ষেপ হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে অপসারণ করেছেন রাষ্ট্রপতি। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংবিধানের নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ অনুসারে এই অপসারণ কার্যকর করা হয়েছে বলে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।

এই প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয় বুধবার (২১ মে)। এতে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬-এর দফা (৬) অনুযায়ী বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের পদ থেকে অপসারণ করেছেন। পরদিন বৃহস্পতিবার (২২ মে) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হয়।

খোন্দকার দিলীরুজ্জামান ২০১৮ সালের ৩০ মে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে হাইকোর্ট বিভাগে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে ২০২০ সালের ৩০ মে তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে, তাঁকে নেতৃত্ব দিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি তদন্তে যুক্ত করা হয়েছিল। বিশেষ করে ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সহিংসতার ঘটনাগুলো তদন্তে গঠিত কমিশনে তিনি ছিলেন প্রধান।

তবে সময়ের পরিক্রমায় তাঁর নাম উঠে আসে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। দলীয় সংশ্লিষ্টতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বিচারপতি দিলীরুজ্জামানসহ হাইকোর্ট বিভাগের আরও ১১ জন বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখা হয়। সেই সময় শিক্ষার্থীদের একটি আন্দোলনে এই বিচারকদের ‘দলবাজ’ ও ‘দুর্নীতিবাজ’ আখ্যায়িত করে অপসারণের দাবিও ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অনুসন্ধান ও সুপারিশে রাষ্ট্রপতির এই সিদ্ধান্ত বলে সূত্র জানায়।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ বিচারপতি খিজির হায়াতকেও অনুরূপভাবে অপসারণ করা হয়েছিল। তিনিও ২০১৮ সালের ৩১ মে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন এবং ২০২০ সালের ৩০ মে স্থায়ী বিচারপতি হন।

এই ঘটনাগুলো বিচার বিভাগে জবাবদিহিতার প্রশ্নকে আবারও সামনে এনেছে। অপসারিত বিচারপতিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ, তদন্ত এবং রাষ্ট্রপতির গৃহীত পদক্ষেপ বিচার বিভাগকে দুর্নীতি ও দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখার প্রক্রিয়ায় বড় বার্তা বহন করে বলেই বিশ্লেষকদের অভিমত।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে