অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদসহ ১২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। সৎ মা নিশি ইসলামের করা মামলায় অভিযোগ প্রমাণের জন্য আসামিদের দেশে থেকে পালিয়ে যাওয়া রোধ করতে এবং তদন্তের স্বার্থে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলায় অভিযোগ আছে, একাধিক আসামি বাদীকে মারধর, হত্যাচেষ্টা, প্রতারণাসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।
ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ বুধবার বাদীপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে এই নির্দেশ দেন। ১২ জনের মধ্যে দুইজন জামিনে থাকা অবস্থায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। বাকি ১০ জন পলাতক রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে গত ২২ এপ্রিল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের মধ্যে আছেন সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের সাবেক এডিসি নাজমুল ইসলাম, মেহের আফরোজ শাওনের বাবা ইঞ্জিনিয়ার মো. আলী, বোন মাহিন আফরোজ শিঞ্জন, সেঁজুতি, সাব্বির, সুব্রত দাস, মাইনুল হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপ-পরিদর্শক শাহ আলম এবং মোখলেছুর রহমান মিল্টন।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এক শর্তসাপেক্ষ বিয়েতে মোহাম্মদ আলী ৫০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে, এর মধ্যে ৫০ হাজার টাকা ইতিমধ্যে গ্রহণ করেন। তবে বিয়ের সময় তিনি তার পূর্ববর্তী বিবাহের তথ্য গোপন করেন। বাদী পরে জানতে পারেন, আসামির আগের বিয়ে সম্পর্কে নানা প্রতারণা ও কৌশল অবলম্বন করে গোপন রাখা হয়েছে। এছাড়া, ২৮ ফেব্রুয়ারি শাওনের বোন শিঞ্জন ও তার স্বামী সাব্বির বাদীর বাসায় গিয়ে বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখার জন্য হুমকি দেন। ৪ মার্চ মো. আলী বাদীকে গুলশানের বাসায় ডেকে এনে তার পুরনো স্ত্রীর উপস্থিতি দেখান, যা দেখে বাদী আসামির প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত হন।
এরপরও বাদীকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিতে বাধ্য করার জন্য ৫ মার্চ শাওন ও অন্য আসামিরা তার বাসায় ঢুকে তাকে মারধর করেন, যার ফলে বাদী অজ্ঞান হয়ে যান। পরবর্তীতে ২৪ এপ্রিল বাদীকে ডিবির অফিসে ডেকে নিয়ে শাওন ও অন্যান্যরা আবারও মারধর করেন। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ডিবি প্রধান হারুন বাড্ডা থানার ওসিকে বাদীর বিরুদ্ধে মামলা নিতে বলেন এবং বাদীকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন ও মাদক ব্যবসায়ীর সাজানো হয়।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১ জুলাই ধার্য করা হয়েছে।