রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ফের একবার উত্তাপ ছড়িয়েছে। বিএনপি নিজেদের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির উদ্যোগে একটি জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণ সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেল চারটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং জানান, গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারনের কার্যালয়ে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির উদ্যোগেই সংবাদ সম্মেলন হচ্ছে।
পাশাপাশি, বৃহস্পতিবারই হাইকোর্ট ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর জন্য দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতের এ সিদ্ধান্তে মেয়র পদে ইশরাকের শপথ গ্রহণে আর কোনো বাধা থাকল না বলে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আগামী ২৬ মে’র মধ্যে ইশরাককে শপথ নিতে বাধা দিলে তা আদালতের অবমাননা গণ্য হবে।
এর আগে, বুধবার (২১ মে) হাইকোর্টের এক বেঞ্চ রিটের আদেশের দিন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার ধার্য করেন। গত ১৪ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ একটি রিট আবেদন করেন যাতে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চান। তবে আদালত সেই রিট খারিজ করে দেন।
ইশরাক হোসেনের সমর্থকদের এক সপ্তাহ ধরে চলা আন্দোলনে নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। যদিও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আইনি জটিলতার কথা বলে এখনো শপথ গ্রহণ আয়োজন করেনি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়ার পদত্যাগ দাবি করেন ইশরাক এবং তার অনুগামীরা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে ইশরাক হোসেন প্রায় পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে। কিন্তু ক্ষমতার পরিবর্তনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তাকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক বৈঠকের পর এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে জানা গেছে। সেখানে দলীয় কৌশল, ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ও চলমান ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।