বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদন এবং আদালতের নির্দেশে দেশের সুনামধন্য চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা পড়েছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এর সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) শেখ মামুন খালেদ ও তাঁর স্ত্রী নিগার সুলতানা খালেদের পাশাপাশি কর কমিশনার আবু সাঈদ মোস্তাক ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল টি এম জোবায়েরের আত্মীয় খন্দকার আবুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের পৃথক দুটি আবেদন খতিয়ে দেখে এ নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করেন। দুদকের পক্ষে ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক শেখ মামুন খালেদের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন এস এম আখতার হামিদ কৃষ্ণা, আর কর কমিশনার ও খন্দকার আবুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব করেন দুদকের পরিচালক মো. মনজুর আলম।
আদালতে উপস্থাপিত অভিযোগে বলা হয়, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) শেখ মামুন খালেদ অবৈধ শেয়ার ব্যবসা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নানা অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন এবং নিজ নামসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। এর পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে চলছে অবৈধ সম্পদ অর্জনের তদন্ত, যা বর্তমানে দুদকের নজরে রয়েছে। অনুসন্ধানের প্রক্রিয়ায় জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদ্বয় দেশ ছেড়ে বিদেশে পালানোর চেষ্টা করতে পারেন, তাই তাদের বিদেশ গমন রোধ করা জরুরি।
অন্যদিকে কর কমিশনার আবু সাঈদ মোস্তাক ও খন্দকার আবুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে এনএসআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল টি এম জোবায়েরের নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, ঘুষ গ্রহণ, চাকরিতে প্রভাব খাটানো এবং অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। তদন্তে জানা যায়, তারা অবৈধ সম্পদ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে স্থানান্তর ও হস্তান্তর করেছেন। এছাড়া লন্ডনে বড় একটি সম্পদ ক্রয়সহ বিদেশে অর্থ পাচারের ঘটনাও তদন্তাধীন। সন্দেহজনক আচরণের কারণে তারা দেশের বাইরে পালানোর চেষ্টা করতে পারেন বলেও বিশ্বস্ত সূত্রে তথ্য পাওয়া গেছে।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অনুসন্ধানের স্বার্থে এবং পলাতক হওয়ার আশঙ্কায় তাদের বিদেশে যাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যাতে তদন্ত কার্যক্রম বাধাহীনভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়।