চট্টগ্রাম শহরের হালিশহর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কলেজ ছাত্র ওয়াহিদুল হক সাব্বিরকে প্রথমে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এরপর পেটে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে গুরুতর আহত সাব্বির টানা ৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় বুধবার বিকেলে মারা গেছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি আইডিয়াল টেকনিক্যাল স্কুল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার মৃত্যুর খবরে পরিবারের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। এই ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। সাব্বির হালিশহরের নয়াবাজার আমিন কন্ট্রাক্টর রোড এলাকার মো. ইসহাক কন্ট্রাক্টরের একমাত্র ছেলে। লাইফ সাপোর্টে যাওয়ার আগে গত শনিবার দুপুরে চ্যানেল ২৪ এর এক সাংবাদিকের কাছে হামলাকারী কয়েকজন কিশোর গ্যাং সদস্যদের নামও বলেছিলেন তিনি। তখন বলেছিলেন, ৩০/৪০জন সন্ত্রাসী তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলা ও মারধরের একপর্যায়ে কিশোর গ্যাং সদস্য আতাউল তাকে (শাব্বির) পেটে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, শাব্বিরের ওপর হামলা চালিয়ে সন্ধ্যার দিকে কিশোর গ্যাং সদস্যরা এলাকায় উল্লাস করেছে। এদের নেতৃত্বে এলাকায় প্রায় প্রতিদিন চাঁদাবাজি, মারামারি ও অস্ত্রবাজির ঘটনা ঘটছে। এদের দমনে পুলিশ দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসী। সাব্বিরের মামা মো. শফিকুল সাংবাদিকদের জানান, গত ১৬ মে শুক্রবার দুপুরে নামাজ পড়ার পর সাব্বিরকে এক তরুণ ‘চা খাওয়ার কথা বলে’ হালিশহরের নতুন বাজার বিশ্বরোড এলাকায় নিয়ে গিয়ে ছুরিকাঘাত করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সাব্বিরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, এলাকার কিশোর-তরুণদের মধ্যে বিরোধ হয়েছিল। তারা সবাই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। এলাকাভিত্তিক গ্রুপিং নিয়ে তাদের মধ্যে মারামারি হয়। সেখানে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল সাব্বিরকে। এদিকে, নগর পুলিশের ডবলমুরিং জোনের সহকারী কমিশনার কাজী মো. বিধান আবিদ বলেন, কিশোর গ্যাং সদস্যদের মধ্যে বিরোধের জেরে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। সাব্বিরের পরিচয় শনাক্তের পর পুলিশ তদন্ত করে একজনকে গ্রেফতার করে। সে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।