নদী ভাঙনে দিশেহারা বকশীগঞ্জের শতাধিক পরিবার

এফএনএস (সরকার আবদুর রাজ্জাক; বকশীগঞ্জ, জামালপুর) : : | প্রকাশ: ২৪ মে, ২০২৫, ০৩:৩৯ পিএম
নদী ভাঙনে দিশেহারা বকশীগঞ্জের শতাধিক পরিবার

জামালপুরের বকশীগঞ্জে নদ নদীতে বাড়ছে পানি ভাঙছে নদী। ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষ। গত কয়েকদিনে মসজিদ, বাজারসহ প্রায় শতাধিক  বাড়িঘর, গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে নদী তীরবর্তী বসবাসকারী শতশত পরিবার । 

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে  বেড়েছে দশানী নদীর পানি। পানি বাড়ার সাথে সাথেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নদী ভাঙন। প্রতিদিন নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে  বসতভিটা, রাস্তাঘাট- ও ফসলি জমি। ইতোমধ্যে মেরুরচর ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক  বসতবাড়ি শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মেরুরচর ইউনিয়নের মুন্দীপাড়া গ্রামের বিদ্যুৎ মিয়া, সুন্দর আলী, জুয়েল মিয়া, সেমাজুল হক, শিক্কু মিয়া, লুৎফর রহমান, শফিকুল ইসলাম, সাজু মিয়া, মজিবুর রহমান, সোলায়মান হক, কালামত আলী, আলাল মিয়া, আমিরুল ইসলাম, ঘুঘরাকান্দি এলাকার ফকির আলী, গামা শেখ, হাসেম আলী, মকবুল শেখ, ফরিদ, মজিবুর রহমান, দুখু মিয়া, টুনু মিয়া, শের আলী, হযরত আলী, ওমান মিয়া, ইসরাফিল, আলামিন, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের আইড়মারী এলাকার হেকতমত আলীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের কবলে পরে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পরেছে ।

এছাড়াও  ঘুঘরাকান্দি বাজার ও একটি মসজিদ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদী ভাঙনের শিকার ওই সব পরিবার গুলো ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন  করছেন । ভাঙনের হুমকিতে আরও প্রায় পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর। প্রতিনিয়ত ভাঙনের ফলে এলাকার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ। অনেকেই ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন ঘরবাড়ি। অনেকেই আবার ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ মিয়া, সুন্দর আলী, জুয়েল মিয়া, সেমাজুল হক জানান, বেশ কয়েকবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন তারা। এবার অসময়ে তীব্র ভাঙনে বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন তারা। এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার দরিদ্র কৃষক। তাদের অনেকের নতুন করে ঘর তোলার সামর্থ্য নেই।

ঘুঘরাকান্দি এলাকার নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ফকির আলী, গামা শেখ, হাসেম আলী, মকবুল শেখ জানান, তাদের সবাই কমবেশি ভাঙনের শিকার। ভাঙনে সহায়-সম্বল বলতে যা ছিল, তার সব শেষ হয়ে গেছে। ফসলি জমিও নদীতে চলে যাচ্ছে। বারবার আবেদন করা হলেও ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।

মেরুরচর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। ইউএনও ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ রানা জানান, । নদীভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের তালিকা করে সরকারি ভাবে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW