চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আবারও জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ২৬ মে, ২০২৫, ০৩:১৮ পিএম
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আবারও জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর হামলা ও যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত এগিয়ে চলছে। এসব ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তাঁকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। এর আগে একই ধরনের অন্য দুটি মামলায়ও তাঁকে কারা ফটকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন এই আদেশ দেন সোমবার (২৬ মে)। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি শেষে আদালত এই অনুমতি দেন। এর আগে ১৮ মে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময়কে একইভাবে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

পুলিশ সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে সনাতনী জাগরণ জোট ও ইসকন অনুসারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। ওইদিন বিক্ষোভের সময় পুলিশের ওপর হামলা, মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ এবং আদালতের ভেতরে-বাইরে আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের ওপর হামলার অভিযোগ উঠে।

এই সহিংসতার মধ্যেই রঙ্গম কনভেনশন হলের গলিতে নিহত হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম। ওই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী হিসেবে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে বলা হয়, সাইফুল ইসলামের ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেন রিপন ও চন্দন। পরে তাঁকে দলবেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা ও সহিংস কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আরও পাঁচটি মামলা করা হয় কোতোয়ালি থানায়। এসব মামলায় মোট ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের মধ্যে ২১ জন হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ দাবি করেছে।

এর আগে ৩১ অক্টোবর, জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে ফিরোজ খান নামের একজন বিএনপি নেতা কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেন। এরপর ২৫ নভেম্বর তাঁকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ এবং পরে চট্টগ্রামে এনে আদালতে হাজির করা হয়। জামিন নামঞ্জুর করে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওইদিনই আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও হত্যার ঘটনাগুলো ঘটে।

বর্তমানে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন এবং একাধিক মামলায় তাঁকে বারবার জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।