ঠেকালেন ইউএনও

সরাইলে বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের বাড়ি দখলের চেষ্টা

এফএনএস (মাহবুব খান বাবুল; সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : | প্রকাশ: ২৬ মে, ২০২৫, ০৪:৩৭ পিএম
সরাইলে বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের বাড়ি দখলের চেষ্টা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের কালীকচ্ছের কৃতিসন্তান বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের বাড়ি থেকে প্রত্নতত্ত অধিদপ্তরের সাইনবোর্ড সরিয়ে রোববার স্থায়ী ইমারত (বহুতল ভবন) নির্মাণ কাজ করে দখলদাররা। তাদের দাবী জায়গাটি তারা ক্রয় করেছেন। নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন দ্রূত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের সহায়তায় কাজ বন্ধ করে দখল ঠেকিয়েছেন। সেখান থেকে সকল নির্মাণ সামগ্রি সরিয়ে নিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির আদেশ ক্রমে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ফেব্রূয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রাজীব কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ওই বাড়িটি অধিগ্রহণ করেছিল প্রত্নতত্ত বিভাগ। 

ইউএনও’র দফতর ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সাবেক চেয়ারম্যান মো. আহমাদুর রহমান ক্রয় সূত্রে মালিকানা দাবী করে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দেই বাড়িটি দখলে নিয়ে বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরূ করেন। বাধ সাজে জেলা উপজেলার শিল্পী, সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন, ইতিহাস সংরক্ষণ পরিষদ, তরী ও সাংবাদিক সংগঠন প্রেসক্লাব। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সরাইল উদীচী শিল্পী গোষ্ঠি ও প্রেসক্লাবসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃত্বে বাড়ির সামনে কাজ বন্ধ করে ঐতিহাসিক স্মৃতি রক্ষার দাবীতে একাধিক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত পালন করেছেন। তারা তৎকালীন ইউএনও’র কাছে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্বারকলিপি দেন। প্রতিবাদকারীদের উপর চড়াও হয় দখলদাররা। পিছু হটেননি কেউ। তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরূষ বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের জন্ম ভিটাটি ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে সরকারের প্রত্নতত্ত অধিদপ্তর অধিগ্রহণ করেন। সেখানে প্রত্নতত্ত বিভাগ একটি সাইনবোর্ড লাগান। দখলদাররা তখন পিছু হটে। বিষয়টি আমলে নেন তৎকালীন জেলা প্রশাসন ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তারা বাড়িটি সরজমিনে পরিদর্শন করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ওই বাড়ির ১৫ শতক জায়গা সংরক্ষণের জন্য গেজেটভুক্ত হয়েছে। পরবর্তীতে অধিগ্রহণের কাজটিও সম্পন্ন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি দখলদার চক্রটি আবারও সক্রিয় হয়। তারা সেই জায়গায় ফাউন্ডেশন দিয়ে বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শুরূ করেন। খবর পেয়ে দ্রূত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন ইউএনও। ইউএনও’র নির্দেশে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সেখান থেকে নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত রডসহ অন্যান্য সামগ্রি দ্রূত সরিয়ে নিয়েছেন। পরবর্তীতে কেউ সেখানে কোন ধরণের কাজ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইউএনও। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন প্রত্নতত্ত অধিদপ্তরের সাইনবোর্ড সরিয়ে জায়গা দখলের চেষ্টার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দখলদারদের একটি ইটা ও বালু কণা থাকবে না। জায়গাটি পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে। পুরাকীর্তি সংরক্ষণে আমরা কাজ করব।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে