মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের একটি ইট ভাটার ধোয়ায় নষ্ট হয়ে যাওয়া ফষলের ক্ষতিপূরণের টাকা দাবীতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা মঙ্গলবার সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
সোমবার সকাল ১০ টা থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের নিচে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত অবস্থান করছেন।
বিষয়টি সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন নিশ্চিত করে বলেন, আমি মিটিং এ মানিকগঞ্জ আছি। অফিসে এসে কৃষকদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিব।
জানাযায়, সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে গত ২০ মে মঙ্গলবার দুপুরে ফুকুরহাটি ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামেন মেসার্স যমুনা ব্রিকস ফিল্ড কে এক লক্ষ টাকা জরিমানাসহ বন্ধ করে দেন ইটভাটার সকল কার্যক্রম ও বিচ্ছন্ন করা হয় বৈদ্যুতিক সংযোগ।
এসময় সাটুরিয়া একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রতিবেদন অনুযায়ী কৃষকের ক্ষতির অর্ধেক টাকা সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা ২১ মের দুপুরের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয় ভাটার মালিক পক্ষকে। কিন্তু ঘটনার ৭ দিন পার হলেও মালিক পক্ষ কৃষকদের টাকা পরিশোধ করেন নি। ভাটার মালিক পক্ষ উল্টো হুমকি দিচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কৃষকেরা মঙ্গলবার সকালে পূনরায় সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। পরে ক্ষতিপূরণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসের সামনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান করবে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।
উল্লেখ্য অভিযুক্ত ওই ইট খোলার নির্গত গরম বাতাস ও কালো ধোয়া ৭৫ কৃষকের প্রায় এক শত বিঘা ক্ষেতের ধান নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ফুকুরহাটী ইউনিয়নের হরগজ মৌজায় তিন ফসলী ভূমিতে দীর্ঘদিন যাবত মেসার্স যমুনা ব্রিকস ফিল্ড নামের ইটখোলাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। ইটখোলাটির নির্গত গরম গ্যাস ও কালো ধোয়া এক কিলোমিটারের মধ্যে কৃষকদের ধান ক্ষেত সহ কৃষিজাত পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ভুক্তভোগী কৃষক মো. শামীম বলেন, ক্ষতিপূরণের টাকা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা ইউএনও অফিস ত্যাগ করবো না। আমাদের ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে তাল বাহানা করা হচ্ছে এবংকি রাতের আঁধারে অনেক কৃষকদের বাড়িতে গি য়ে মালিকপক্ষের লোকজন ভয় ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিচ্ছেন।
মেসার্স যমুনা ব্রিকস ফিল্ড ইটভাটার মালিক প্রতিনিধি, আবুল কালাম বলেন, কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। তারা সাড়ে ৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি পূরণ দিতে বলছিল। তদন্তের সময় তারা শুধু কৃষকের সাথে কথা বলেছে। আমাদের সাথে কথা বলে নি। মূলত ভাটার ধোয়ায় কৃষকের ক্ষতি হয়নি বলেও সে দাবী করেন।
এ ব্যাপারে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী কৃষকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে মেসার্স যমুনা ব্রিকস ফিল্ড কে এক লক্ষ টাকা জরিমানাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। অপরদিকে ভুক্তভোগী কৃষকদের ক্ষতিপূরণ বাবদ সাড়ে আট লক্ষ টাকা গত ২১ মে বুধবার দুপুরের মধ্যে মালিকপক্ষকে পরিশোধ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণের টাকার জন্য আমার অফিসের সামনে অবস্থান করছেন, আমি মানিকগঞ্জে মিটিং থাকায় কথা বলতে পারি নি। অফিসে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিব।