অনলাইন গেম এখন অল্প বয়সীদের এতটাই প্রিয়, একবার গেম খেলতে বসলে ডিভাইস ছেড়ে উঠতেই চায় না তারা। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে শিশু-কিশোর ও তরুণদের মধ্যে অনলাইন গেমের আসক্তি ক্রমাগত বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিল ছেড়ে স্মার্টফোনে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেমের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এতে প্রাথমিক থেকে শুরু করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা আসক্ত হচ্ছেন। অনলাইন গেম তরুণদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হলেও এই জনপ্রিয়তা অভিভাবকদের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত আসক্ত হয়ে পড়েছে আমাদের আশেপাশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েগুলো। শুধু স্কুল,কলেজ নয় মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের ভিতরেও এর প্রভাব পড়েছে। প্রতিনিয়ত এই কিশোর-কিশোরী ছাত্র-ছাত্রীগুলো টাকা দিয়ে এমবি কিনে দিন-রাত পার করছে ঐ গেমস এর পিছনেই। পিতামাতা টাকা দিতে অস্বীকার করলে অভিমান করে “সুইসাইড”এর পথও বেছে নিচ্ছে কেউ কেউ। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইন গেম এমন এক ধরনের কাজ, যার মধ্যে আসক্তির উপাদান খুবই তীব্র। অর্থাৎ একবার কেউ খেলা শুরু করলে সেই গেমের প্রতি আসক্তি বাড়তেই থাকে। অনলাইন গেম কিশোর-কিশোরীদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়, এখানে তারা আনন্দ পাচ্ছে। কিন্তু এটার পেছনে অনেক ক্ষতিকর দিক আছে। মাদকের যেমন আসক্তি, এটারও তেমন আসক্তি। প্রতিরোধের জন্য মনোচিকিৎসক এবং কাউন্সেলিং করানো হচ্ছে আসক্তদের। এছাড়া পরিবারের দায়িত্বশীল আচরণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধিও সমাধান হতে পারে। অধিকাংশ ভিডিও গেমের কনটেন্টগুলো যুদ্ধ, সংঘাত, রক্তপাত নিয়ে- যা কোমলমতি শিশুদের মানসিক বিকাশের অন্তরায়। শুধু শহরে নয়, ভিডিও গেমসের দিকে ঝুঁকছে গ্রামের শিশু-কিশোরেরাও। মফস্বলের শিশু কিশোররা একত্রে দলবেঁধে ভিডিও গেম খেলছে। খেলার মাঠ থাকা সত্ত্বেও ভিডিও গেমের দিকে ঝুঁকে তারা। একসময় বিকাল হলেই গ্রামের খেলার মাঠগুলো মেতে উঠতো ছোট ছোট অসংখ্য ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের গ্রামীণ খেলাধুলা আর আনন্দ আড্ডায়। এখন আর সেই পরিবেশ তেমন দেখা যায় না। কারণ, তাদের হাতে এখন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে স্মার্টফোন। তারা খেলাধুলা ছেড়ে ফোনে ব্যস্ত হয়ে থাকে। গ্রামের অসংখ্য ছেলে আছে যাদের খেলাধুলায় বিকাল কাটানোর কথা ছিল কিন্তু তারা এখন ফ্রি ফায়ার, পাবজি নামক ক্ষতিকর গেমগুলো খেলে সময় পার করছে। ইন্টারনেট বা গেম আসক্তি কিন্তু মাদকাসক্তির মতোই একটি সমস্যা। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য অভিভাবকদের কঠোর নজরদারির সাথে সাথে তাদের হাতে এই ফোন না দেওয়া এবং দেশের সর্বস্তরের মানুষের এসকল বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিয়ে এই আসক্তি দূর করা চেষ্টা করতে হবে অভিভাবকদের। সেই সাথে এসব গেমকে নিষিদ্ধ করতে উদ্যোগ নিতে হবে।