নোয়াখালীর সেনবাগে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। সম্প্রতি উপজেলা ৯নং নবীপুর ইউনিয়নের ৩নং বড়চারিগাঁও গ্রামের বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশনের (বাপেক্স) গ্যাসের অনুসন্ধান কালে বড়চারিগাঁও গ্রামে প্রাথমিক ভাবে গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনা দেখা দেয়। এরপর বাপেক্সে’র পক্ষ থেকে গ্যাস উত্তোলনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যার আংশ হিসেবে গত ডিসেম্বর মাসে গ্যাসে কুপ খনন ও গ্যাসের সম্বাবতা যাচাইয়ের জন্য জমিন অধিগ্রহন করে নিমান কাজ শুরু করে। বর্তমানে কুপে যাতায়াতের জন্য সড়ক নির্মান এবং ভবন সহ অন্যন্য স্থাপনা নির্মানে বালু ভরাটের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। গ্যাস প্রাপ্তির ঘটনা পুরো এলাকার মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নবীপুর এসফাকুল হক মান্না মাদরাসার শিক্ষক আমিন উল্লাহ বিএসসি জানান, আমাদের গ্রামের মাটির নিচে গ্যাস রয়েছে জেনে অত্যান্ত আনন্দিত ও খুশি তারা। কিন্ত বাপেক্স’র পক্ষ থেকে গ্যাস উত্তোলনের জন্য তাদের ৩ ফসলী জমিনের প্রায় সাড়ে ৫একর জমিন নিয়ে কাজ শুরু করেছে । কিন্তু তাদের জমিন অধিগ্রহন করা হয়নি। এতে করে তাদের জমিন থেকে ফসল উৎপাদন করা যাচ্ছেনা। বাপোক্সের পক্ষ থেকে কোন ক্ষতিপূরন দেওয়া হয়নি। অভিলম্ভে তাদের ক্ষতিপুরণের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবী জানান।এছাড়াও এখানে কুপ খননের পর উত্তোলিত গ্যাস প্রথমে সেনবাগে ও পরে জাতীয় গ্রীডে সংযুক্ত করার দাবী জানান।
শনিবারে সকালে সরেজমিনে গ্যাস প্রাপ্তির স্থান বগড়চারিগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকটি ভ্যাকু মেশিন বালু ভরাটের কাজ করছে। এবং শ্রমিকরা ভবন নির্মানের জন্য সি-টু ফাইল পাইল ঢালাইয়ের কাজ করছে।
কথা হয় নির্মান কাজ তদারকিকারী বাপেক্সেএ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ কামরুল হাসানের সঙ্গে তিনি জানান, বাপেক্সএ মাঠ পর্যায়ে প্রাথমিক গ্যাস অনুসন্ধান কালে অত্র এলাকায় গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাবনা দেখা দেয়। এরপর গ্যাস উত্তোলনের জন্য ৩হাজার থেকে সাড়ে ৩হাজার ফুট গভীরে রকুপ খননের প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেয় বাপেক্স। বর্তমানে এখানে বালু ভরাট ও ভবন নির্মানের জন্য কাজ চলমান রয়েছে। এগুলো নির্মানের পর কুপ খননের কাজ শুরু হবে। কুপ খনন শেষে বুঝা যাবে কতটুকু গ্যাস রয়েছে কুপটিতে।
বাপেক্স সুত্রে জানাগেছে, দেশের অর্থনীতি ও শিল্পায়নকে আরও গতিশীল করতে বাড়তি গ্যাস প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে মানুষের চাহিদা পূরণে দেশীয় জ্বালানি অনুসন্ধান ও উৎপাদনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে সরকার। যার অংশ হিসেবে ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪৬টি নতুন অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খনন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ১৯৭৬ সালে প্রথম গ্যাসের সন্ধানে প্রথম কূপ খনন করা হয়। এরপর ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় আরেকটি কূপ খনন করা হয়। দুটি কূপের কোনোটিতে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যায়নি। পরে ২০১৩ সালে তৃতীয় আরেকটি কূপের খনন শেষে সেখানে কাঙ্ক্ষিত গ্যাস পাওয়া যায়। পরে ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়। ওই কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।