প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র চট্টগ্রামের হালদা নদী। বৃহস্পতিবার দিবাগত শেষ রাতে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ে। ডিম আহরন চলে শনিবার বেলা এগারোটা পর্যন্ত। হালদা গবেষকদের তথ্য মতে চলতি আমাবস্যার তিথিতে এবার ২শ ৫০টি নৌকায়, ৫শ ৫০ জন ডিম সংগ্রহকারী ১৪ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করেছে।হালদা নদী থেকে সংগৃহীত ডিম থেকে নদীর দুই পাড়ে চলছে এখন রেনু ফোটানোর উৎসব। গত বছর ২০২৪ সালে হালদা নদী থেকে সংগৃহীত ডিমের পরিমান ছিল ১হাজার ৬শ ৮০ কেজি। এবার গত বছরের চেয়ে অধিক পরিমাণে ডিম পাওয়ায় ডিম সংগ্রহকারীদের মধ্যে খুশীর আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছে। নদীর দুই পাড়ে চারটি সরকারী হ্যাচারীতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এবং শতাধিক মাটির কুয়ায় এনালগ পদ্ধতি ডিম ফোটানো হচ্ছে। ডিম থেকে রেনু ফোটাতে রাত দিন ব্যস্ত সময় পাড় করছে ডিম সংগ্রহকারীরা। শনিবার সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টিপাত বন্ধ রয়েছে। এতে ডিম ফোটাতে ভালো সময় পাড় করছে ডিম আহরনকারীরা। এদিকে বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকায় গরমের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিরিক্ত গরমের কারনে ডিমের ক্ষতির ও আশংকা করছে সংশ্লিষ্টরা।
প্রসংগত প্রতি বছরের এপ্রিল মাসের আমাবস্যা, পূর্ণিমার তিথিতে মা মাছ নদীতে ডিম ছাড়ার কথা। এই তিথিতে নদীতে ছাড়া ডিম দ্রুত বর্ধনশীল। কিন্তু পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় এবছর এই মাসের দুই তিথি ও মে মাসের পূর্ণিমার তিথিতে মা মাছ ডিম ছাড়েনি মাছ। এতে ডিম সংগ্রহকারীদের মধ্যে কিছুটা হতাশা দেখা দেয়। তবে তাদের ভরশা মে মাসের আমাবস্যার তিথি ও জুন মাসের পূর্ণিমা ও আমাবস্যার তিথি। বিগত তিন তিথিতে ডিম না ছাড়ায় ডিম সংগ্রহকারীরা দুই দফায় কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল ও শিরনী বিতরণের আয়োজন করেন।
হালদা থেকে, সংগৃহীত ডিম থেকে কি পরিমান রেনু উৎপাদন হতে পারে, উৎপাদিত রেনুর বাজার মূল্য কত হতে পারে সে বিষয় নিয়ে আগামী মঙ্গলবার( ৩ জুন) মৎস্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নৌ পুলিশ, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার্স রিচার্স ল্যাবরেটরি আনুষ্ঠানিক সভায় মিলিত হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন হালদা গবেষক অধ্যাপক ড মঞ্জুরুল কিবরিয়া। সেই সভায় সব বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।