চট্টগ্রামের মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের লম্পট প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে ভিডিও কলে রেখে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে সহবাসের ভিডিও ধারণ করে পর্নোগ্রাফি তৈরির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন ভুঁইয়ার পদত্যাগ ও অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করেছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় মিরসরাই মিনি স্টেডিয়াম থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এর আগে মিরসরাই মহাসড়কের পাশে মানববন্ধনের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, গাইড বইয়ের প্রকাশনা থেকে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের নিন্মমানের বই কিনতে বাধ্য করা তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর অন্যতম। প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে সবচেয়ে অভিযোগটা হচ্ছে, দিনের বেলায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভিডিও কলে রেখে নিজের স্ত্রীর সাথে পর্নোগ্রাফি তৈরি করে তা শিক্ষর্থীদের মোবাইলে পাঠান। দরিদ্র শিক্ষাথীদের যৌন সুড়সুড়ি দিয়ে অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন।
স্থানীয় সংবাদকর্মীদের হাতে আস একটি ভিডিওতে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন ভুঁইয়া সম্পূর্ণ উদাম শরীরে এক যুবতীর সাথে যৌন সংগমে লিপ্ত হয়েছেন। ভিডিওর অপর প্রান্তে অজ্ঞাত এক শিক্ষার্থী ছিলেন। সেই শিক্ষার্থী তার মোবাইল থেকে ভিডিওটি স্কিন রেকর্ড করেন। এই ধরেনের ভিডিও তিনি প্রতিনিয়িত করেন এবং ভিডিওতে এক একসময় একেকজন শিক্ষার্থীকে থাকতে বাধ্য করেন। ওদিকে প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন ভুঁইয়ার লালসার শিকার অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে বিদায় নিয়ে অন্যত্র ভর্তি হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ২০২৩ সালে এসএসপি টেস্ট পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করায় প্রধান শিক্ষক চাঁদনি নামের একটি মেয়েকে অকথ্য ভাষায় গালমন্ধ করেন। ফলে মেয়েটি অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট গাইড কিনতে না পারার কারণে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হাঁটানোর হুমকিও দেন। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া সানজিদা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি চোখে দেখি কিন্ত স্যার আমাকে অন্ধ দেখিয়ে সরকারি সহায়তার ১২ হাজার ৫০০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। কিন্তু আমি অর্থের অভাবে পড়ালিখা বন্ধ করে দিয়েছি। শাহিনা আক্তার নামে আরেক শিক্ষাথী বলেন, আমি কথা বলতে পারি। কিন্তু স্যার আমাকে বাক প্রতিবন্ধী দেখিয়ে আমার নামে টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। আমি বিনা বেতনে অধ্যায়নের আবেদন করলেও স্যার গ্রহণ করেনি।
মিরসরাই বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমি ভুল করেছি, ক্ষমা চাই। আমাকে ক্ষমা করেন দেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলি বলেন, তিনি নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। পর্নোগ্রাফির বিষয়টি কোনোভাবেই মানা যায় না। অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে যাচাই করে দেখব।