ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত শীর্ষ সেনা ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশ: ১৩ জুন, ২০২৫, ০১:১১ পিএম
ইরানে ইসরায়েলি হামলায় নিহত শীর্ষ সেনা ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মাত্রা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শুক্রবার (১৩ জুন) ভোররাতে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানে বড় পরিসরে বিমান হামলা চালায়। তেহরানসহ বিভিন্ন স্থানে চালানো এই হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাসহ অন্তত চারজন পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান ইসরায়েলের দিকে ছুড়ে দিয়েছে প্রায় ১০০টি ড্রোন।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফি ডেফরিন জানান, ইরানে ১০০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে অংশ নেয় ২০০টির বেশি যুদ্ধবিমান। হামলার মূল লক্ষ্য ছিল পারমাণবিক স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ও শীর্ষ সামরিক ঘাঁটি।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, এই হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত হন। একই সঙ্গে নিহত হন ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সেন্ট্রাল হেডকোয়ার্টার্সের কমান্ডার গোলামালি রাশিদ এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা আলী শামখানি (যদিও পরে খামেনি অক্ষত রয়েছেন বলে জানানো হয়)।

হামলায় নিহত বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন—

১. ফেরেয়দুন আব্বাসি: ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা (এইওআই)-এর সাবেক প্রধান।

২. মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি: তেহরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি।

৩. নাম না জানা আরও দুজন পরমাণু বিজ্ঞানী।

বিবিসি জানায়, ফেরেয়দুন আব্বাসির ওপর ২০১০ সালে একবার হত্যাচেষ্টা হয়েছিল, তখন তিনি বেঁচে যান।

শুক্রবার দুপুরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, ইরানের দিক থেকে প্রায় ১০০টি ড্রোন ইসরায়েলের আকাশে পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি ড্রোনকে প্রতিহত করার প্রচেষ্টা চলছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় এই অভিযানের পেছনের লক্ষ্য ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমাদের এই সামরিক অভিযানের লক্ষ্য ইরানি হুমকি প্রতিরোধ করা। যতদিন না এই হুমকি শেষ হচ্ছে, ততদিন অভিযান চলবে।”

তিনি আরও বলেন, এই হামলা চালানো হয়েছে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা এবং নাতাঞ্জ ইউরেনিয়াম পরিশোধনাগার লক্ষ্য করে।

অন্যদিকে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি এই হামলাকে ‘বর্বরোচিত’ আখ্যা দিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেন, “ইসরায়েল নিজেই নিজের জন্য একটি করুণ পরিণতির পথ তৈরি করেছে।”