নীলফামারী জেলার একমাত্র সিনেমা হল সৈয়দপুর তামান্না। এ হলে চলছে সুপার স্টার সাকিব খানের তান্ডব ছবি। বর্তমানে হলে তেমন একটা দর্শক চোখে পড়ে না। মাঝে মাঝে ভাল ছবি লাগলে পুরুষ দর্শক দেখা গেলেও নারীর দেখা মেলেনা। তবে এ ঈদে তামান্নায় তান্ডব ছবিতে নারী পুরুষের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। কোন কোন সময় হল ভর্তি দর্শক দেখা যায়। শুধু সৈয়দপুরের লোক নয়,আশপাশের জেলা উপজলা থেকেও আসেন নারী পুরুষ দর্শক ছবি দেখতে। হল ভর্তি দর্শক দেখে যেন মনে হয় প্রাণ ফিরে পেয়েছে তামান্না সিনেমা হলটি।
ঈদুল আজহার ২য় দিন থেকে এ সিনেমা হলে চলছে তান্ডব সিনেমা। টিকেটও বিক্রি হচ্ছে হাজার টাকার। এত দর্শক গত কয়েক মাসে হলে আসেনি। দর্শকের উপস্থিতি নতুন করে আশার আলো দেখছেন হল মালিক। অন্যদিকে সুস্থ্য ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং হলে বসে সিনেমা দেখার পরিবেশ ফিরে পাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে দর্শক শ্রোতা।
সৈয়দপুর তামান্না সিনেমা হলে গিয়ে দেখা যায়, হলের ভিতরে কোন সিট খালি নেই। আগ্রহ নিয়েই সবাই সাকিব খান আর সাবিলা নুর অভিনিত ‘তান্ডব’ সিনেমা দেখছেন। প্রিয় নায়ক নায়িকার জোরালো উপস্থিতি বা ডায়লোগে দিচ্ছেন হাততালি।
সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর থেকে হলে ছবি দেখতে আসা দর্শক সোহেল বলেন,ঈদ ছাড়া সিনেমা হলে আসা হয় না। তবে এবার আসা যেনো আরও সার্থক হয়েছে। সাকিবের তান্ডব ছবি সেই দারুন হয়েছে তাই বন্ধুবান্ধবসহ উপভোগ করেছি। মহিলা দর্শকদের নিরাপত্তাও রয়েছে,তাই মাঝে মধ্যে এখানে সিনেমা দেখতে আসি।
সৈয়দপুরের পার্শ্ববর্তী উপজেলা পার্বতীপুর থেকে আসা লাবনী,সিমা,রিফাত জানান, আত্মীয়স্বজনসহ সিনেমা দেখতে এসেছি। এর আগে এই হলে ঈদে ‘বরবাদ’ সিনেমাটি দেখেছি। হলের পরিবেশ মোটামুটি ভালো। এবার তান্ডব দেখেতে এসেছি। ছবি খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ছোট পর্দার জনপ্রিয় সাবিলা নুরকে বড় পর্দায় খুব মানিয়েছে।
তামান্না সিনেমা হলের অপারেটর আব্দুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছি। এমনও দিন গেছে, দর্শক না থাকায় সিনেমা হলের শো বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এবার ঈদে দর্শকের চাপ অনেক। দিনে-রাতে মিলে চারিটি শো চালাতে হচ্ছে। প্রতিটি শোতে দর্শক পরিপূর্ণ।
সৈয়দপুর তামান্না সিনেমা হলের পরিচালক মাহবুব আলী ঝন্টু জানান, অনেকদিন পর হল পরিপূর্ণ হয়েছে। অনেকে আসছেন সাকিবের তান্ডব সিনেমা দেখতে। প্রতিদিন চারটি শো চলছে তবে সন্ধ্যার পর থেকে দুটি শো একদম হাউজফুল যাচ্ছে। এর আগে দর্শকের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে সৈয়দপুরের ৩টি সিনেমা হল। এ সময় ঋণ নিয়ে সিনেমা হলের ব্যবসাটি ধরে রেখেছি। দর্শকের উপস্থিতিতে এবার আশার আলো দেখছি। জনপ্রিয় অভিনেতা ও ভালো কাহিনির সিনেমা নির্মিত হলে দর্শক অবশ্যই হলমুখী হবেই। যেখানে মহিলা দর্শক সিনেমা হলে আসা শুরু করেছে, সেখানে বাংলা সিনেমার আবারও ইতিবাচক দিক লক্ষণীয়। দর্শকের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে তান্ডব চলবে আরও বহুদিন।